বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

বলিউডের গানে হ্যারি বেলাফন্টের প্রভাব

April 27, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: গানকে হাতিয়ার করে বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন তিনি। শরিক হয়েছিলেন অধিকার আদায়ের আন্দোলনে। ১৯৫০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রে সাদা-কালোর বিভেদ যখন চরমে, তখনই বেজে উঠেছিল তাঁর ‘ক্যালিপসো’র সুর। ফল, তিনি হয়ে উঠেছিলেন শিল্পীর চেয়ে বেশি কিছু। সেই কিংবদন্তি গায়ক, গণসংগীতশিল্পী, অভিনেতা হ্যারি বেলাফন্টে গত মঙ্গলবার নিউইয়র্কে প্রয়াত হয়েছেন।

ক্যালিপসো হলো ত্রিনিদান অ্যান্ড টোবাগো থেকে সৃষ্ট সংগীতের ধারা যা বিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগে সমগ্র ক্যারিবীয় অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। এই ক্যালিপসোর সুরই বেলাফন্টেকে তারকা বানিয়ে দিয়েছিল। ‘জ্যামাইকা ফেয়ারওয়েল’ ও ‘ডে-ও’-এর মতো গানগুলো দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়েছিলেন, দুটি গানই বেলাফন্টের তৃতীয় অ্যালবাম ‘ক্যালিপসো’ জায়গা পেয়েছিল। গোটা বিশ্বে শ্রোতাদের কাছে ক্যালিসপোকে জনপ্রিয় করার কৃতিত্ব তাঁরই।

তবে শিল্পী বেলাফন্টের প্রতিফা কেবল ক্যালিসপো’র মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। জ্যাজ ব্লুজ থেকে শুরু করে গসপেল, পপ, লোকসংগীত এবং আরও অনেক কিছুর মিশ্রনে ভিন্ন ঘরানার গান তৈরি করে গিয়েছেন তিনি।

বেলাফন্টেকে নিয়ে লিখতে গেলে পেটুলা ক্লার্কের সঙ্গে তাঁর সেই ‘ঐতিহাসিক’ ঘটনার কথাও বলতে হবে। ১৯৬৮ সালে এনবিসি টিভি পেটুলা ক্লার্ককে একটি বিশেষ অনুষ্ঠান সঞ্চালনার আমন্ত্রণ জানায়। সেখানে হ্যারি বেলাফন্টের সঙ্গে যুদ্ধবিরোধী গান ‘অন দ্য পাথ অব গ্লোরি’তে পারফর্ম করার সময় বেলাফন্টের বাহু স্পর্শ করেন ক্লার্ক। ঘটনা সামান্যই, কিন্তু সেই সময়ের প্রেক্ষাপটে কৃষ্ণাঙ্গ বেলাফন্টেকে শেতাঙ্গ ক্লার্কের স্পর্শ ছিল বিশেষ কিছু। এই দৃশ্য প্রচারিত হওয়ার পর দর্শকের একাংশ ক্ষুব্ধ হতে পারে, এমন শঙ্কায় দৃশ্যটি বাদ দিতে বলেন অনুষ্ঠানের স্পনসর। ক্লর্ক অবশ্য রাজি হননি। মার্টিন লুথার কিং নিহত হওয়ার চার দিন পর সম্প্রচারিত হয় অনুষ্ঠানটি। ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয় এই অনুষ্ঠান, পায় এমি মনোনয়নও। এটিই যুক্তরাষ্ট্রের টিভিতে শেতাঙ্গ ও অশেতাঙ্গ পাত্র–পাত্রীদের মধ্য প্রথম স্পর্শের ঘটনা।

বেলাফন্টে দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণ বৈষম্যের প্রতিবাদে সরব হয়েছিলেন। বর্ণ বৈষম্যের বিরুদ্ধে একটি প্রচারে নেতৃত্বও দিয়েছিলেন তিনি। ১৯৮৮ সালে তাঁর গানের অ্যাবাম ‘প্যারাডাইস ইন গাজানকুলু’ প্রকাশিত হয়। যেখানে তিনি দশটি প্রতিবাদী গানের মধ্যে দিয়ে কালো দক্ষিণ আফ্রিকানদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন।

তার জনপ্রিয় গানগুলো সারা বিশ্বে ঘর খুঁজে পেয়েছে। যা থেকে বলিউডও বাদ যায় নি। তাঁর বেশ কয়েকটি বিখ্যাত গান থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে তৈরি হয়েছিল বেশ কয়েকচি হিন্দি চলচ্চিত্রের হিট গান।

বেলাফন্টের গাওয়া সুরের উপর ভিত্তি করে তিনটি ক্লাসিক হিন্দি গানের উল্লেখ করা হল-

ইতনি বড়ি মেহফিল

১৯৬০ সালে ‘দিল আপনা অউর প্রীত পরাই’ চলচ্চিত্রে এই গানটি ব্যবহৃত হয়েছিল। গেয়েছেন আশা ভোঁসলে। এই গানে বেলাফন্টের ‘বানানা বোট’ গানের সুর প্রতিধ্বনিত হয়েছে।

আজা গোরি দিল মে রাখলে তুঝে

এই গানটি কিশোর কুমার ১৯৭৯ সালের ‘দো শিকারী’ ছিবির জন্য গেয়েছিলেন। যেখানে বেলাফন্টের ‘কোকোনাট ওম্যান’ গানের ছাপ স্পষ্ট।

দো চমকতি আঁখো মে

১৯৫৮ সালে ‘ডিটেকটিভ’ ছবিতে গীতা দত্তের গাওয়া এই গানটি তৈরি হয়েছিল হ্যারি বেলাফন্টের ‘জ্যামাইকা ফেয়ারওয়েল’ দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Harry belafonte, #Hindi film songs

আরো দেখুন