ঘৃণাভাষণ সংক্রান্ত মামলা দায়েরে বিলম্ব নয়, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঘৃণাভাষণ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। ২০২২ সালে শীর্ষ আদালত দিল্লি, উত্তরপ্রদেশ ও উত্তরাখণ্ডকে নির্দেশ দিয়েছিল স্বতঃপ্রণোদিত মামলা দায়ের করার। সেই নির্দেশেরই পরিধি পরিবর্ধিত করে এবার সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে এর আওতায় নিয়ে এল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার বিচারপতি কে এম জোসেফ এবং বি ভি নাগরত্নের বেঞ্চ এই মর্মে নির্দেশ জারি করল। এই ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নিয়ে এদিন সুপ্রিম কোর্ট বলেছে, বিদ্বেষমূলক ভাষণ গুরুতর অপরাধ। এর ফলে দেশের ধর্মনিরপেক্ষ কাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। স্বতঃপ্রণোদিতভাবে মামলা দায়েরে দেরি করলে রাজ্যগুলির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার প্রক্রিয়া শুরু করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
ঘৃণাভাষণ সংক্রান্ত একাধিক মামলা দায়ের হয়েছিল সুপ্রিম কোর্টে। সেই মামলাগুলিরই শুনানি ছিল এদিন। আর সেই সময়ই শীর্ষ আদালত জানিয়ে দিল, ঘৃণাভাষণ দেশের ধর্মনিরপেক্ষ ভাবমূর্তিকে ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে। তাই এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতেই হবে।
২০২২ সালে তিন রাজ্যের প্রতি নির্দেশ জারি করতে গিয়ে সুপ্রিম কোর্টের মন্তব্য ছিল, ধর্মের নাম করে আমরা কোথায় যাচ্ছি? আমরা ধর্মকে যে জায়গায় নামিয়ে আনছি, তা সত্যিই দুঃখের। এদিন এই ইস্যুতে শীর্ষ আদালত বলেছে, আমরা ফের স্পষ্ট করে বলছি, বক্তা যে ধর্মেরই হোক না কেন বিদ্বেষমূলক ভাষণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যাতে ভারতের সংবিধানের প্রস্তাবনায় বর্ণিত দেশের ধর্মনিরপেক্ষ চরিত্র অক্ষত থাকে।
এই মামলায় আবেদনকারীরা ঘৃণা-ভাষণের উপরে নজর রাখার জন্য প্রতি রাজ্যে এক জন নোডাল অফিসার নিয়োগের সুপারিশ করেছেন। বেঞ্চের প্রস্তাব, প্রতি জেলায় এক জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ করা হোক। আবেদনকারীদের মতে, সোশ্যাল মিডিয়া থেকে ঘৃণা-ভাষণ সরাতেও একটি প্রক্রিয়া তৈরি করা প্রয়োজন।
দিল্লি সংঘর্ষের আগে দেওয়া ঘৃণা-ভাষণের অভিযোগে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর ও অন্য কয়েক জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করার আর্জি জানিয়েছিলেন কয়েক জন আবেদনকারী। বিচারপতি জোসেফ বলেন, ‘‘এ ক্ষেত্রে মামলার দায়েরের জন্য সরকারের অনুমতি প্রয়োজন বলে ম্যাজিস্ট্রেট মনে করেছেন। হাই কোর্টও সেই নির্দেশ বহাল রেখেছে। বিচারকেরা রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব নন। তাঁরা কোনও দলের কথা মাথায় রাখেন না। কেবল সংবিধানের কথা ভেবে কাজ করেন।’’ ১২ মে ফের এই মামলার শুনানি হবে।