দ্রব্যমূল্যের প্রভাবে আমিষ খাবার জোগার করতে হিমশিম খাচ্ছে মানুষ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিতে নাজেহাল আমজনতা। গত একবছর ধরে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্য যে ভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে তাতে ‘নুন আনতে পান্তা ফুরানোর’ অবস্থা। স্বাভাবিকভাবে মূল্যবৃদ্ধির এই আঁচ সাধারণ মানুষের ভাতের থালাতেও প্রভাব ফেলেছে ভালোরকম। দেশের অন্যতম ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ‘ক্রিসিল’-এর হিসেব অনুযায়ী, ‘২০২২ সালের জানুয়ারিতে এক থালা আমিষ ভাত খেতে সাধারণ মানুষের খরচ হতো ৫১ টাকা। এখন তা বৃদ্ধি পেয়ে ৫৮.৩০ টাকায় পৌঁছেছে। এক বছরের মধ্যে দাম বৃদ্ধির হার, ১৪.৩১ শতাংশ। যাঁরা নিরামিষ খান, তাঁদের প্লেট পিছু খরচ গতবছর জানুয়ারি পর্যন্ত ছিল ২৪.৮ টাকা। তা বেড়ে এখন দাঁড়িয়েছে ২৫ টাকায়।
তথ্য অনুযায়ী, গত এক বছরে খাবার খরচ সবথেকে বেশি বেড়েছে অক্টোবরে। উৎসবের মরশুমে মাথা পিছু আমিষ পাতের খরচ ছিল ৬২.৭০ টাকা। দাম বৃদ্ধির মূল কারণ মুরগির মাংসের দাম বেড়ে যাওয়া। ওই মাসে নিরামিষ পাতের খরচ বেড়ে হয়েছিল ২৯ টাকা। সে সময় ভোজ্য তেল এবং আটা-ময়দার অত্যধিক দাম বৃদ্ধির ফলে নিরামিষ খাবারের দামও বেড়ে গিয়েছিল।
ক্রিসিলের রিপোর্ট বলছে, গত এক বছরে সবচেয়ে চড়া ছিল মুরগির মাংসের দাম। তা ৫৫ শতাংশ বেড়েছে। উৎপাদন কম হওয়ায় আটার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ১৫ শতাংশ। ৬ শতাংশ বেড়েছে ভোজ্য তেলের দামও। সাম্প্রতিককালে অবশ্য সামান্য রেহাই দিয়েছে ভোজ্য তেল। কিছুটা হলেও কমেছে আটার দাম। তবে মুরগির মাংসের দামে ফের আগুন। বাজার গিয়ে তার আঁচ রীতিমতো পাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এর সঙ্গে জ্বালানির আগুন ছোঁয়া দাম কষ্ট তো দিচ্ছেই। ক্রিসিলের রিপোর্ট মোতাবেক, গত তিন মাসে গ্যাসের দাম বেড়েছে ১১ শতাংশ। গত এক বছরের হিসেব কষলে সেই খরচ বৃদ্ধির হার আরও অনেকটা বেশি।
ভারতে বহু ধর্ম, সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। তাদের যেমন রোজগারের মধ্যে সামঞ্জস্য নেই, তেমনই খাওয়াদাওয়ার রুচিও আলাদা আলাদা। সে সব বিষয়গুলিকে মাপকাঠি করে ভারতবাসীর গড়পড়তা খাই-খরচের হিসেব কষেছে ক্রিসিল। মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানতে এক বছর আগে থেকে ধাপে ধাপে ২.৫ শতাংশ সুদ বৃদ্ধির পথে হেঁটেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু তাতেও যে খুব একটা কাজের কাজ কিছু হচ্ছে না, তা ক্রিসিলের রিপোর্ট থেকে পরিস্কার।