ত্রিপুরাতেও প্রশিক্ষকের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ দুই নাবালিকা কুস্তিগিরের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ত্রিপুরাতেও ব্রিজভূষণ কাণ্ডের ছায়া। একদিকে মহিলা কুস্তিগিরদের উপর কুস্তি অ্যাসোসিয়েশনের সর্বভারতীয় সভাপতির যৌন নির্যাতনের অভিযোগকে কেন্দ্র করে রাজধানী উত্তাল। ত্রিপুরার দুই নাবালিকা কুস্তিগির, কোচের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানি এবং অন্যান্য গুরুতর অভিযোগ নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছে। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তর ত্রিপুরা জেলার ধর্মনগরে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ ব্যবস্থা নেওয়ার আগেই স্থানীয় যুবকরা অভিযুক্ত কোচকে মারধর করেছে। কোচ এখন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। জানা গিয়েছে, ভোপালে আয়োজিত একটি জাতীয় কুস্তি প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে দুই নাবালিকা কুস্তিগির নাম নথিভুক্ত করাতে কোচ শিলু দেবনাথের কাছে গিয়েছিলেন। অভিযোগ উঠছে, আলগাপুর সরকারি বিদ্যালয়ের অভিযুক্ত ক্রীড়া শিক্ষক নানা অজুহাতে দুই নাবালিকাকে শহর থেকে অনেকটাই দূরে তিলথৈ গ্রামের একটি ভাড়া বাড়িতে নিয়ে যান। আরও অভিযোগ, দুই নাবালিকা কুস্তিগিরের পানীয়তে মাদক মিশিয়ে দিয়েছিলেন কোচ। দুই নাবালিকা কোনওমতে সেখান থেকে পালায়। এরপরই স্থানীয়রা ওই কোচকে মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়। ধর্মনগর থানায় কোচের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে দুই কুস্তিগির।
অন্যদিকে, কুস্তিগিরদের বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে তোলপাড় গোটা দেশ। দিল্লি পুলিশের আচরণে বিক্ষোভের আগুন যেন ঘি পড়েছে। পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে, তাতে আপাতত বিক্ষোভ থামার কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কুস্তিগির বজরং পুনিয়ার অভিযোগ, বুধবার রাতে কয়েকজন উর্দিধারী তাঁদের ধর্নামঞ্চের উপর হামলা চালায়। জিনিসপত্র সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন বলেই অভিযোগ করছেন তারা। অনেকেই আহত হয়েছেন। অত্যাচার থেকে মহিলারাও সুরাহা পায়নি। পুলিশ নাকি কোনও কথা শুনতে রাজি ছিল না। তাঁরা বলেন, পুলিশকে তাঁরা বারবার বলার চেষ্টা করছিলেন, যে তাঁরা অনেকেই জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত। দেশকে বহু পদক এনে দিয়েছেন। কিন্তু পুলিশ কোনও কথা শোনেনি বলেই অভিযোগ। পুলিশ কর্মীদের আচরণে তাঁরা অসম্মানিত। তাঁদের সাফ কথা, অপমানের পর তাঁরা আর সরকারি পুরস্কার রাখতে চান না। যাবতীয় পদক ও পুরস্কার ফিরিয়ে দিতে চান তাঁরা।
বজরং আরও অভিযোগ করছেন, মহিলা কুস্তিগিরদের গায়ে পর্যন্ত হাত দেওয়া হয়েছে। উল্লেখ্য, গত ২৩ এপ্রিল থেকেই দেশের কুস্তিগিররা শান্তিপূর্ণভাবে ধর্না চালাচ্ছেন। ক্রমশ তাঁদের সমর্থনও বাড়ছে। কুস্তিগিরদের দাবি, তাঁদের বিক্ষোভে জনসমর্থন দেখেই অনেকে ভয় পেয়ে এসব করছেন। সুবিচার না পাওয়া পর্যন্ত তাঁরা লড়াই জারি রাখবেন। এই ঘটনায় অনেকেই নিন্দায় সরব হয়েছেন। শোনা যাচ্ছে, কুস্তিগির গীতা ফোগত ও তাঁর স্বামীকে নাকি পুলিশ হেফাজতে নিয়েছিল। যদিও পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বিক্ষোভ আরও বাড়ছে। খুনের অভিযোগে দিল্লির পুলিশ কমিশনারের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন কুস্তিগির ভিনেশ ফোগত। অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের আবেদন জানিয়েছেন তিনি। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকেও চিঠি লিখেছেন বজরং পুনিয়া। সাধারণ মানুষকে বিক্ষোভে সামিল হওয়ার ডাক দিয়েছেন কুস্তিগিররা। দেশের শীর্ষ আদালতে শুনানি আরম্ভ হয়েছে। ব্রিজভূষণকে গ্রেপ্তার না করা পর্যন্ত আন্দোলন থামবে না বলেও জানাচ্ছেন কুস্তিগিররা।