Not Out 97! আজও ছুটে চলেছে হাওড়া স্টেশনের জোড়া ডায়ালের ঘড়ি
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হাওড়া স্টেশনে পা পড়েনি এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া মুশকিল। ভারতের অন্যতম ব্যস্ততম স্টেশনের আইনিক ল্যান্ডমার্ক হল জোড়া মুখের ঘড়ি। স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে করোনার কারণে লকডাউন, বাম জমানা থেকে পালাবদল সব দেখে ফেলেছে এই ঘড়ি। এখন তিনি বৃদ্ধ, তাও থামেনি ছোটা।
১৯২৬ সালে লন্ডনের এডওয়ার্ড জন ডেন্টের সংস্থা ঘড়িটি তৈরি করেছিল। সে বছরই তা হাওড়া স্টেশনে জায়গা পায়। এরাই বানিয়েছিল লন্ডনের বিগ বেন। ঘড়িটি হাওড়া স্টেশনে লাগানোর দায়িত্ব পেয়েছিল বিখ্যাত ঘড়ি ব্যবসায়ী দেবপ্রসাদ রায়ের সংস্থা রায় ব্রাদার্স কোম্পানি।
৩ ফুট ৯ ইঞ্চির ডায়ালে ঘন্টার কাঁটার দৈর্ঘ্য দেড় ফুট। ছোট কাঁটা লম্বায় দু-ফুট। একদা একে দম দিতে হত, পালসার যন্ত্রের মাধ্যমে দম দেওয়া হত ঘড়িটিতে। তখন ঘড়িটি ছিল মেকানিক্যাল ঘড়ি। ১৯৭৫ সালে তা ইলেকট্রো মেকানিক্যাল হয়। অধুনা রিচার্জেবল ব্যাটারিচালিত স্বয়ংক্রিয় ঘড়ি, এখন আর দম দিতে হয় না। জোড়া মুখের ডান দিকে রয়েছে ১ থেকে ৮ নম্বর প্ল্যাটফর্ম। আর বাম দিকে রয়েছে ৯ থেকে ১৫ নম্বর প্ল্যাটফর্ম।
ঘড়িটির সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে বাঙালির ঐতিহ্য। সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় তাঁর প্রেমিকা পরবর্তীতে স্ত্রীয়ের সঙ্গে যখন দেখা করতে আসতেন, তখন এই ঘড়ির নীচেই দাঁড়াতেন। শোনা যায়, শক্তি চট্টোপাধ্যায় লোকাল ট্রেনে চেপে প্রেম করতে যেতেন। প্রেমিকা মীনাক্ষীর সঙ্গে ঘড়ির নীচেই দেখা করতেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় তাঁর অরণ্যের দিনরাত্রি উপন্যাসে চার বন্ধুকে ধলভূমগড় যাওয়ার আগে এখানেই দেখা করিয়েছিলেন। সোনার কেল্লাতেও সত্যজিৎ বড় ঘড়ি দেখাতে ভোলেননি! আজও এই ঘড়িই ভিড়ে ঠাসা হাওড়া স্টেশনের ভরসাযোগ্য ল্যান্ডমার্ক।
ভাষ্য পাঠ: মধুরিমা রায়
সম্পাদনা: মোঃ রবিউল ইসলাম
তথ্য গবেষণা: সৌভিক রাজ