চির ঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাংলা সাহিত্য আরও নিঃস্ব হল! চির ঘুমের দেশে পাড়ি দিলেন সাহিত্যিক সমরেশ মজুমদার। বেশ কিছু দিন ধরেই সিওপিডির (COPD) সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। সোমবার কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে বিকেল ৫টা ৪৫ নাগাদ শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিলর ৭৯ বছর।
সাতকাহন’ থেকে ‘গর্ভধারিনী’, ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’, অর্জুন, মেজরের অ্যাডভেঞ্চার সহ বাংলা সাহিত্যের একের পর এক ক্লাসিক রূপকার তিনি।
১৯৪২ সালের ১০ই মার্চ সমরেশ মজুমদার জন্মগ্রহণ করেন জলপাইগুড়ি জেলায়। তাঁর শৈশব কেটেছে ডুয়ার্সের গয়েরকাটা চা বাগানে। তাঁর প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় জলপাইগুড়ি জেলা স্কুল থেকে। তিনি কলকাতায় আসেন ১৯৬০ সালে। বাংলায় স্নাতক হন কলকাতার স্কটিশ চার্চ কলেজ থেকে এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে।
গ্রুপ থিয়েটারএর প্রতি তাঁর প্রচণ্ড আসক্তি ছিলো। তার প্রথম গল্প “অন্যমাত্রা” লেখাই হয়েছিলো মঞ্চনাটক হিসাবে, আর সেখান থেকেই তার লেখকজীবনের শুরু। তার লেখা অন্যমাত্রা ছাপা হয়েছিলো দেশ পত্রিকায় ১৯৬৭ সালে।
সমরেশ মজুমদারের প্রথম উপন্যাস “দৌড়” ছাপা হয়েছিলো দেশে পত্রিকাতেই, ১৯৭৫ সালে। তিনি শুধু তাঁর লেখনী গল্প বা উপন্যাসের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখেননি, ছোটগল্প, ভ্রমণকাহিনি থেকে গোয়েন্দাকাহিনি, কিশোর উপন্যাস লেখনীতে তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তাঁর প্রত্যেকটি উপন্যাসের বিষয় ভিন্ন, রচনার গতি এবং গল্প বলার ভঙ্গি পাঠকদের আন্দলিত করে। চা বাগানের মদেসিয়া সমাজ থেকে কলকাতার নিম্নবিত্ত মানুষেররা তাঁর কলমে উঠে আসেন রক্ত-মাংস নিয়ে। সমরেশ মজুমদারের উল্লেখযোগ্য উপন্যাসগুলির মধ্যে সাতকাহন, তেরো পার্বণ, স্বপ্নের বাজার, উজান, গঙ্গা, ভিক্টোরিয়ার বাগান, আট কুঠুরি নয় দরজা, অনুরাগ ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য। তাঁর ট্রিলজি ‘উত্তরাধিকার’, ‘কালবেলা’, ‘কালপুরুষ’ বাংলা সাহিত্য জগতে তাঁকে বিশেষ খ্যাতির অধিকারী করেছে।
অনেক অসাধারণ লেখনীর শব্দের এই রূপকার জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক অনেক পুরস্কার অর্জন করেছেন। ১৯৮২ সালে আনন্দ পুরস্কার, ১৯৮৪ সালে সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার, বঙ্কিম পুরস্কার এবং আইয়াইএমএস পুরস্কার জয় করেছেন।