অনাহার অতীত, আমলাশোলের লক্ষ্মীপ্রিয়া এখন জীবন যুদ্ধের অনুপ্রেরণা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: অনাহার একদিন আমলাশলকে সংবাদ শিরোনামে তুলে এনেছিল। কিন্তু বিগত এক দশককে বদলে গিয়েছে ঝাড়গ্রাম জেলার বেলপাহাড়ী ব্লকের আমলাশোল। সেই গ্রামের লক্ষ্মীপ্রিয়া মুড়া পেলেন সরকারি চাকরি। এই প্রথম কোনও মহিলা আমলাশোল থেকে সরকারি চাকরি পেলেন। তিনিই এখন অনুপ্রেরনা। পরবর্তী প্রজন্মের কাছে তিনিই দৃষ্টান্ত। এখন গ্রামের ছেলে-মেয়েদের জীবন যুদ্ধে লড়াইয়ের পাঠ দিচ্ছেন লক্ষ্মীপ্রিয়া।
লক্ষ্মীপ্রিয়া হাজারে প্রতিকূলতাকে হারিয়ে সরকারি চাকরি পেয়েছেন, বর্তমানে তিনি সরকারি নার্স। বাড়ির নিত্যঅভাব অনটন সত্বেও, পড়াশোনা চালিয়ে গিয়েছেন তিনি। তাঁর জয়ে খুশি গ্রামবাসীরা। লক্ষ্মীপ্রিয়ার কথায়, এক সময় তাদের গ্রাম অনুন্নয়নের প্রতীক হয়ে উঠেছিল। এখন রাজ্য সরকার প্রভুত উন্নয়ন করেছে। তিনি বলেন, কোনও দিন ভাবতেই পারিনি তিনি সরকারি চাকরি পাবেন। সরকার পাশে না দাঁড়ালে সম্ভব হত না। আরও জানান, তাদের গ্রামের বহু ছেলে মেয়ের প্রতিভা আছে। সরকারি চাকরি পাওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। যথাসম্ভব তাদের পাশে থাকার চেষ্টা করছেন লক্ষ্মীপ্রিয়া। লক্ষ্মীপ্রিয়ার স্বামী সুনীল মুড়ার কথায়, হার না মানা জেদের কারণে সাফল্য পেয়েছে লক্ষ্মীপ্রিয়া। তিনিও সরকারি চাকরির পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
লক্ষ্মীপ্রিয়ার বাবা সতীশ মুড়া কৃষিকাজ করতেন। দরিদ্র পরিবারে অনটনের সঙ্গে লড়াই করতে করতে ২০১০ সালে মাধ্যমিক, ২০১২ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেন লক্ষ্মীপ্রিয়া। ভর্তি হন নার্সিং কলেজে। কলকাতার একটি নামী বেসরকারি হাসপাতালে ট্রেনিং নেন লক্ষ্মীপ্রিয়া। পাশাপাশি চলতে থাকে সরকারি চাকরির প্রস্তুতি। গ্রামে ইন্টারনেট পরিষেবা নেই। প্রতিদিন প্রায় ৩০ কিলোমিটার দূরে, বেলপাহাড়ী বাজার এলাকায় যেতেন তিনি। এখন লক্ষ্মীপ্রিয়া বেলপাহাড়ীর বালিচুয়া স্বাস্থ্য কেন্দ্রে কর্মরত।