নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন হতে পারে চলতি মাসেই
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দিল্লির অন্যতম স্থপতি হার্বার্ট বেকারের পরিকল্পনা ছিল, কাউন্সিল হাউস হবে তিন কোনা। কিন্তু অন্য স্থপতি এডউইন ল্যুটিয়েন্স তাতে আপত্তি তুলে বলেন, কাউন্সিল হাউস হবে বৃত্তাকার। ল্যুটিয়েন্সের মতেই সিলমোহর পড়েছিল। দিল্লিতে তৈরি হয়েছিল বৃত্তাকার কাউন্সিল হাউস। এখনকার সংসদ ভবন। বেকার বা ল্যুটিয়েন্স কেউই জানতেন না, প্রায় একশো বছর পরে তাঁদের তৈরি সংসদ ভবনের সামনেই তৈরি হবে ত্রিকোণাকার নতুন সংসদ ভবন। বেকার প্রথমে ঠিক যেমনটা ভেবেছিলেন।
১৯২১ থেকে ছ’ বছর ধরে তৈরি হয়েছিল ‘হাউস অব পার্লামেন্ট।’ যা আজকের বৃত্তাকার সংসদ ভবন। সে সময় খরচ হয়েছিল ৮৩ লক্ষ টাকা। এডুইন ল্যুটিয়েন্স আর হার্বার্ট বেকারের নকশায় তৈরি বর্তমান ভবন। যেখানে লোকসভার কক্ষে সর্বাধিক ৫৫০ জন এমপি বসতে পারেন। আর মোদী জমানায় ১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মীয়মান সংসদের লোকসভায় বসতে পারবেন মোট ১ হাজার ২৭২ জন। নতুন ভবনে কোনও সেন্ট্রাল হল নেই। তাই লোকসভা-রাজ্যসভার যৌথ অধিবেশন হবে লোকসভার কক্ষেই।
চলতি মাসেই উদ্বোধন হবে নতুন সংসদ ভবনের। তবে আগামী জুলাই মাসে সংসদের বাদল অধিবেশন সেখানে হবে কিনা, তা এখনও নিশ্চিত নয়। কিন্তু আর দেরি নয়। চলতি মাসেই ১৫ থেকে ২৮ তারিখের মধ্যে শুভদিন দেখে ত্রিকোণাকৃতি নতুন সংসদ ভবনের উদ্বোধন করতে চলেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তারই প্রস্ততি চলছে জোর কদমে। রেলভবনের দিকে রাস্তা, বর্তমান সংসদ ভবনের সিংহদুয়ারের সামনে যে টিন দিয়ে ঘেরা ছিল, তা খুলে দেওয়া হয়েছে। নির্মাণ কার্য চলায় ২০২০ সাল থেকে যা ছিল আড়ালে, এখন তা রাস্তা থেকেও দেখা যাচ্ছে। সরানো হচ্ছে ধুলো, মাটির স্তূপ। ২৪ ঘণ্টা তিন শিফটে কাজ চলছে।
নতুন সংসদ ভবন গড়তে বাজেটের বাইরেও খরচ হয়েছে। আগে বাজেট ছিল ৯৭১ কোটি টাকা। এখন তা বেড়ে হয়েছে প্রায় ১ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। কোভিড কালে এভাবে টাকা খরচের সমালোচনায় সরব হয়েছিল বিরোধীরা। কিন্তু সে কথায় গুরুত্ব না দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন সংসদ ভবনের ভিত পুজো করেছিলেন ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর। ৬৪,৫০০ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে ত্রিকোণাকৃতি নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে ব্যবহার হয়েছে ২৬ হাজার ৪৫ মেট্রিক টন ইস্পাত। ৬৩ হাজার ৮০৭ মেট্রিক টন সিমেন্ট। ৯ হাজার ৬৮৯ কিউবিক মিটার ফ্লাই অ্যাশ।