করোনাকালে চার হাত এক করে গেরোয় দম্পতিরা! পরিত্রাণ ডিভোর্সে?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: করোনাকালে চার হাত এক করে গেরোয় পড়েছেন দম্পতিরা! নিদান একটাই ডিভোর্স দিয়ে ফের নিজের জীবন সঙ্গীকেই বিয়ে করতে হবে। একজন দুজন নন, পনেরো জন দম্পতি এমন অবস্থায় পড়েছেন। তাঁদের বিয়ের শংসাপত্রে বড়সড় গরমিল পেয়েছে রেজিস্ট্রার জেনারেল ম্যারেজ অফিস। প্রায় ১৪ হাজার ম্যারেজ সার্টিফিকেটে ত্রুটি ধরা পড়েছে। ভুল-ত্রুটিগুলো সহজে সংশোধন করা যাচ্ছে না।
রেজিস্ট্রার জেনারেল ম্যারেজ অফিস তরফে জানা গিয়েছে, ওই ১৫ জন দম্পতিদের বিয়ের শংসাপত্র পুরোপুরি বৈধ বলে গণ্য করা যাচ্ছে না। পেনশন, পিএফের টাকা, বা সম্পত্তির মালিকানা অথবা কর্মরত অবস্থায় স্বামীর মৃত্যু হলে স্ত্রীয়ের চাকরি পেতে এই ম্যারেজ সার্টিফিকেট কার্যকর হবে না। রেজিস্ট্রার অফিসের স্ক্রুটিনিতে তা বাতিল হবে।
২০২০ থেকে ২০২২ সালের ১৫ মে সময়কালের মধ্যে, ইস্যু হওয়া প্রায় ২১ হাজার ১০৭টি বিয়ের শংসাপত্রে গরমিল ধরা পড়েছে। ৭১০৭টির সংশোধন হয়েছে। জানা গিয়েছে, নিয়ম অনুযায়ী হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্ট বা স্পেশাল ম্যারেজ অ্যাক্টে বিয়ের ক্ষেত্রে তিনজন সাক্ষীর স্বাক্ষর প্রয়োজন। ওই ১৫ জন দম্পতির ক্ষেত্রে, সইয়ের জায়গায় অসংলগ্ন কয়েকটি অক্ষর শুধু লেখা রয়েছে। এছাড়া পাত্রপাত্রীর সঙ্গে ম্যারেজ অফিসারের ছবি অনলাইনে আপলোড করার নিয়ম। ১৫টি আবেদনপত্রে আসল পাত্রপাত্রীদের ছবিই নেই। সব ক্ষেত্রেই একই ছবি ব্যবহার হয়েছে। যাঁরা রেজিস্ট্রি করেছেন, তাঁদের ছবি এবং সাক্ষীদের সই সরকারের কাছে নেই। ফলে ১৫ দম্পতির ম্যারেজ সার্টিফিকেট কার্যত মূল্যহীন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আইন অনুযায়ী বিবাহের শংসাপত্র বাতিল করা ছাড়া অন্য কোনও উপায় নেই। নির্দিষ্ট সময়ের পর তা সংশোধন করারও উপায় থাকে না। ফলে একমাত্র পথ, ডিভোর্স করে ফের বিয়ে করা। এই সমস্যার জন্য একশ্রেণির ম্যারেজ অফিসারের গাফিলতিকেই দায়ী করেছে রেজিস্ট্রার অফিস। ইতিমধ্যেই তাঁদের চিহ্নিত করা হয়েছে খবর মিলেছে।
করোনা পরবর্তী সময়ে, অনলাইনে আবেদনের নিয়ম বদলেছে। পাত্রপাত্রী, ম্যারেজ অফিসার এবং তিন সাক্ষীকে এক ফ্রেমে রেখে ছবি তুলে এখন জমা দিতে হয়। ফলে ভুল-ত্রুটির সংখ্যা কমছে। গত বছরের ১৬ মের পর থেকে এ যাবৎ মাত্র ৬৩০টা সার্টিফিকেটে ত্রুটি সামনে এসেছে। সেগুলি সংশোধন করা হয়েছে। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে বিয়ে সাক্ষীদের হাতের ছাপ নেওয়ার ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে দ্রুত। বলাবাহুল্য, এ জিনিস চালু হলে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা আরও হ্রাস পাবে।