করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা বেশ কয়েকটি রেল দুর্ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে, কোনগুলি?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: শুক্রবার সন্ধেয় হাওড়ার শালিমার থেকে চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সঙ্গে মুখোমুখি ধাক্কা লেগেছে একটি মালগাড়ির। একটি ট্রেনের উপর চড়ে গিয়েছে অন্য ট্রেনের কামরা। করমণ্ডল এক্সপ্রেসের সাধারণ কামরা দুটি মুখ গুঁজে গিয়ে পড়েছে পাশের নয়ানজুলিতে। তার পর যে ভয়াবহ ছবি দেখা যাচ্ছে, তা শিউরে ওঠার মতো। অনেকে আশঙ্কা করছেন করমণ্ডল এক্সপ্রেসে মৃত্যুমিছিল গাইসালকেও ছাপিয়ে যেতে পারে।
এদিনের এই রেল দুর্ঘটনা সাম্প্রতিক অতীতের বেশ কয়েকটি রেল দুর্ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিচ্ছে। এক নজরে দেখে নিন-
১৯৮১ সালে বিহার ট্রেন বিপর্যয়
একটি যাত্রীবাহী ট্রেন লাইনচ্যুত হয়ে বিহারের সহরসার কাছে বাঘমতি নদীতে ডুবে যায়। এই দুর্ঘটনায় ৫০০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
১৯৯৫ সালে ফিরোজাবাদ রেল বিপর্যয়
উত্তর প্রদেশের ফিরোজাবাদের কাছে দিল্লিগামী পুরুষোত্তম এক্সপ্রেস দাঁড়িয়ে থাকা কালিন্দী এক্সপ্রেসে ধাক্কা মারে। এই দুর্ঘটনায় অন্তত ৩৫৮ জনের মৃত্যু হয়েছিল।
১৯৯৯ সালে গাইসাল ট্রেন দুর্ঘটনা
গুয়াহাটি থেকে প্রায় ৩১০ মাইল দূরে অসমের গাইসালের কাছে দুটি দ্রতগতির ট্রেনের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৯০ জন যাত্রী নিহত হয়েছিলেন।
১৯৯৮ সালে খন্না ট্রেন বিপর্যয়
কলকাতাগামী জম্মু তাওয়াই-শিয়ালদহ এক্সপ্রেস পাঞ্জাবের উত্তর রেলওয়ের খান্না-লুধিয়ানা বিভাগের খান্নার কাছে অমৃতসরগামী লাইনচ্যুত ফ্রন্টিয়ার গোল্ডেন টেম্পল মেলের কোচে ধাক্কা দেয়। ওই দুর্ঘটনায় অন্তত ২১২ জন প্রাণ হারান।
২০১০ সালে জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস বিপর্যয়
মুম্বাইগামী হাওড়া কুরলা লোকমান্য তিলক জ্ঞানেশ্বরী সুপার ডিলাক্স এক্সপ্রেস পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার খেমাশুলি এবং সারডিহার মধ্যে বিস্ফোরণের ফলে লাইনচ্যুত হয়েছিল এবং পরে একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সাথে ধাক্কা লাগে। মাওবাদীরা এই বিস্ফোরণ ঘটিয়েছিল বলে সন্দেহ করা হয়েছিল। এই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৭০ জন নিহত হয়েছিলেন।
২০১৬ ইন্দোর-পাটনা রেল বিপর্যয়
ইন্দোর-পাটনা এক্সপ্রেস পুখরায়ান, কানপুরের কাছে ২০১৬ সালর ২০ নভেম্বর লাইনচ্যুত হয়। এই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১৫০ জন নিহত হয়েছিলেন।
২০০২ সালে হাওড়া-নিউ দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা
হাওড়া-নয়া দিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস রাত ১০টা ৪০ মিনিটে গয়া এবং দেহরি-অন-সোন স্টেশনের মধ্যে রফিগঞ্জ স্টেশনের কাছে লাইনচ্যুত হয়। ১৪০ জনেরও বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন।
২০০৫ সালে ভ্যালিগোন্ডা ট্রেন দুর্ঘটনা
২০০৫ সালের ২৯ অক্টোবর আকস্মিক বন্যায় একটি ছোট রেল সেতু ভেসে যায় এবং একটি “ডেল্টা ফাস্ট প্যাসেঞ্জার” ট্রেন লাইনচ্যুত হয়, এই দুর্ঘটনায় কমপক্ষে ১১৪ জন নিহত হন এবং ২০০ জনেরও বেশি আহত হন।
২০১০ সালে সাঁইথিয়া ট্রেন দুর্ঘটনা
উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস এবং বনঞ্চল এক্সপ্রেস পশ্চিমবঙ্গের সাঁইথিয়ায় ২০১০ সালের ২৯ অক্টোবর একে অপরকে ধাক্কা মারে। ওই দুর্ঘটনায় প্রায় ৬৩ জন নিহত হয়েছিলেন এবং ১৬৫ জনেরও বেশি লোক আহত হন।
২০১২ সালে হাম্পি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা
২০১২ সালের ২২ মে হুবলি-ব্যাঙ্গালোর হাম্পি এক্সপ্রেসের সাথে অন্ধ্র প্রদেশের কাছে একটি পণ্যবাহী ট্রেনের সাথে সংঘর্ষে হয়। ট্রেনের চারটি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং একটিতে আগুন ধরে যায়। এই দুর্ঘটনায় প্রায় ২৫ জন যাত্রী মারা যান এবং প্রায় ৪৩ জন আহত হন।