দুই হাজারের নোট তুলে নেওয়ায় আমানতে সুদের হার কমতে পারে বলে আশঙ্কা
২০১৬ সালে নোট বাতিল করেছিল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। সে বার ৫০০ এবং ১ হাজার টাকার নোট বাতিল করা হয়েছিল। যা ঘিরে দেশ জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছিল। বিপাকে পড়েছিলেন বহু মানুষ। এ বার ২ হাজার টাকার নোট তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া (আরবিআই)। ১৯ মে, শুক্রবার এক বিজ্ঞপ্তিতে এই কথা জানায় আরবিআই। অবিলম্বে ২ হাজার টাকার নোট ব্যবহার বন্ধ করতে ব্যাঙ্কগুলিকে পরামর্শ দিয়েছে আরবিআই। ২ হাজার টাকার নোট থাকলে, তা ২৩ মে থেকে ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে ব্যাঙ্কে জমা করতে হবে। অর্থাৎ দু’হাজার টাকার নোটের আয়ু ৩০ জুন পর্যন্ত।
রিজার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ী এই সময়ের মধ্যে ব্যাঙ্কগুলিতে জমা পড়বে বিপুল পরিমাণ টাকা। তাতে নগদ জোগান বাড়বে। সেক্ষেত্রে কি কমবে আমানতের উপর সুদ? এমন প্রশ্নই এবার সামনে আসছে। কারণ, টাকার জোগান বাড়লে ব্যাঙ্কগুলি সাধারণ মানুষকে বেশি টাকা সুদ দিয়ে খরচের বহর বাড়াতে চাইবে না। বরং কম সুদে ঋণ দিয়ে তারা ওই বাড়তি নগদ বাজারে এনে ফেলবে, এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অন্যতম ক্রেডিট রেটিং সংস্থা ইক্রার বক্তব্য, নোটবন্দির সময়ে দেখা গিয়েছিল ব্যাঙ্কগুলিতে নগদ বৃদ্ধি পেয়েছে। সেইসময় ব্যাঙ্কগুলিতে যেভাবে আমানত সংগ্রহের ব্যাপারে চাপ কমেছিল, এখনও তাই-ই হবে। অর্থাৎ আমানত বাড়বে। এক্ষেত্রে ব্যাঙ্কগুলিতে আমানতের উপর সুদ বৃদ্ধির যে চাপ থাকত, তা কমবে। ইক্রা’র দাবি, এতে স্বল্প মেয়াদি আমানতগুলির সুদের হার কমবে।
গতবছর মে মাস থেকে গত একবছর ধরে ধাপে ধাপে ২.৫ শতাংশ রেপো রোট বাড়ায় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। তার জেরে ব্যাঙ্কগুলিও আমানতের উপর সুদের হার বাড়াতে বাধ্য হয়। তা সাধারণ মানুষকে কিছুটা স্বস্তি দিয়েছিল। যদিও ঋণের ক্ষেত্রে সুদ বৃদ্ধি সমস্যায় রাখে বহু মানুষকে। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে সুদ যে আর কোনওভাবেই বাড়বে না, তা স্পষ্ট জানিয়েছে স্টেট ব্যাঙ্ক অব ইন্ডিয়াও। তাদের রিপোর্ট বলছে, আরবিআইয়ের তথ্য অনুযায়ী, ৩.৬ লক্ষ কোটির দু’হাজার টাকার নোট এখনও রয়ে গিয়েছে। এর মধ্যে যদি ৬০ হাজার কোটি টাকার নোট ব্যাঙ্কের কাছেই থেকে যায়, তাহলে বাজারে রয়েছে তিন লক্ষ কোটি টাকার নোট। এর মধ্যে যদি দু’লক্ষ কোটি টাকার নোট মানুষ খরচ করে ফেলেন বা ব্যাঙ্কে গিয়ে বদলে নেন, তাহলে এক লক্ষ কোটি টাকা ব্যাঙ্কে জমা পড়বে।