চাপে পড়েই কি অবশেষে কুস্তিগিরদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে বাধ্য হলেন অনুরাগ?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বুধবার সকাল থেকেই কেন্দ্রীয় ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুরের বাড়িতে এক এক করে পৌঁছন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিকেরা। ছিলেন কৃষক নেতা রাকেশ টিকায়েতও। মঙ্গলবার বেশি রাতে সুর নরম করে কুস্তিগিরদের আলোচনার জন্য ডেকেছিলেন ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। মঙ্গলবার রাত ১২টা ৪৭ মিনিটে টুইট করেন অনুরাগ। লেখেন, “কুস্তিগিরদের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে ইচ্ছুক সরকার। সে কারণে আলোচনার জন্যে কুস্তিগিরদের কাছে আবার আমন্ত্রণ পাঠিয়েছি।”
এদিন তাঁর বাসভবনে গিয়ে দেখা করে পাঁচ দফা দাবি জানিয়ে এলেন আন্দোলনরত কুস্তিগিররা। যে পাঁচ দফা দাবি তাঁরা জানিয়েছেন-
১। বৃজভূষণ শরণ সিংকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করতে হবে।
২। কুস্তি ফেডারেশনে যেন ওই পরিবারের কেউ না যুক্ত থাকেন।
৩। জাতীয় কুস্তি ফেডারেশনের মাথায় কোনও মহিলাকে বসাতে হবে।
৪। অবিলম্বে কুস্তি ফেডারেশনে প্রক্রিয়া মেনে নির্বাচন করতে হবে।
৫। নতুন সংসদ ভবনের সামনে প্রতিবাদ করতে যাওয়ায় কুস্তিগিরদের বিরুদ্ধে থানায় যে অভিযোগ জানানো হয়েছে তা খারিজ করতে হবে।
উল্লেখ্য, গত শনিবার রাতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করেন আন্তর্জাতিক স্তরে পদকজয়ী কুস্তিগিররা। কিন্তু সেখানেও অধরা থেকে যায় রফাসূত্র। অমিত শাহর সঙ্গে দেখা করার পর থেকেই যৌন হেনস্তায় অভিযুক্ত বিজেপি সাংসদ বৃজভূষণ শরণ সিংয়ের গ্রেপ্তারির দাবিতে আন্দোলনরত কুস্তিগিরদের নিয়ে ভুয়ো খবর ছড়িয়ে পড়ে। সাক্ষী মালিকদের কাজে যোগ দেওয়া, নাবালিকার অভিযোগ প্রত্যাহার করে নেওয়া, এমনই হাজারো মিথ্যা রটানো হয়। বজরং পুনিয়া, ভিনেশ ফোগট, সাক্ষী মালিকরা যেমন স্পষ্ট জানিয়েছেন, কাজে যোগ দেওয়া মানে আন্দোলন থেকে সরে আসা নয়। তেমনই ওই নাবালিকার বাবাও বলেছেন, ‘‘অভিযোগ প্রত্যাহার করা হয়নি। লড়াই হবে শেষ তক।’’
অভিযোগ, পকসো আইনে অভিযোগ সরে গেলে বৃজভূষণকে বাঁচানো আরও সহজ হয়ে যাবে মোদী-শাহের। তাই বারবার চাপ দেওয়া হয় নির্যাতিতাকে। কিন্তু অভিযোগ প্রত্যাহারে রাজি করানো যায়নি। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে মিথ্যা খবর রটানোর প্রচেষ্টা শুরু হয়।
এরপরই সর্বভারতীয় এক সংবাদমাধ্যমে বজরং পুনিয়া বলেন, ‘‘সরকারের সঙ্গে কথা বলে কুস্তিগিররা কেউ সন্তুষ্ট হননি। আর সরকারও আমাদের দাবি মেনে নেয়নি। ফলে আন্দোলন জারি আছে। কীভাবে আন্দোলন এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সে বিষয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমাদের উপর বেশি চাপ দেওয়া হলে আমরা চাকরি ছেড়ে দিতে প্রস্তুত।’’ নাবালিকার অভিযোগ প্রত্যাহারের গুজন নিয়ে বজরং বলেন, ‘‘দেশবাসীর উচিত অন্তত ওই নাবালিকার বাবার কথায় বিশ্বাস করা। ভুয়ো খবরে নয়। তথাকথিত সূত্রের খবর সম্পূর্ণ মিথ্যা।’’
বজরংয়ের ওই সাক্ষাৎকারে পরেই তাঁর কাছে ফোন আসে শাহের। তিনি অনুরোধ করেন আর এক দফা বৈঠকের জন্য। কিন্তু তিনি নিজে বৈঠক করবেন কি না তা এখনও স্পষ্ট নয়। অমিতের অনুরোধের পরে বজরং পাল্টা বলেন, গোপনে আর তাঁরা কোনও বৈঠক করতে রাজি নন। এর পরেই মঙ্গলবার রাতে অনুরাগ টুইট করেন।