মোদীকে মহাত্মা বানাতে, তাঁর জন্মভূমিকে পুণ্যভূমি রূপে হাজির করতে মরিয়া BJP?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ভাদনগর গুজরাতের এক জনপদ, অধুনা এর পরিচিতি মোদীর কারণে। কিন্তু মোদী গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার আগে আম জনতা কি ভাদনগরের নাম জানত? উত্তরটা না, সংখ্যাগরিষ্ঠের জবাব এটাই। কিন্তু এখন বিজেপি উঠে পড়ে লেগেছে ভাদনগরের ইতিহাস মানুষকে জানাত। ইতিহাস জানানো অত্যন্ত শুভ উদ্যোগ কিন্তু ইতিহাস থাকলে তো মানুষ তা জানবে! মোদীর জন্মভূমির ধর্মীয় মাহাত্ম্য কি আদৌ দেশের পুরাতত্ত্ববিদরা জানেন?
মেকি মাহাত্ম্য তৈরির চেষ্টায় ভাদনগরের চরিত্র, ইতিহাসও বদলে ফেলতে মরিয়া বিজেপি। ইউনেস্কোর হেরিটেজ তালিকায় ভাদনগরকে নিয়ে আসার তোড়জোড় আগেই শুরু হয়েছে। এবার ভাদনগরকে দেশের অন্যতম প্রাচীন ধর্ম, দর্শন ও সংস্কৃতির কেন্দ্রস্থল হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে উঠে পড়ে লেগেছে কেন্দ্রের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। বৌদ্ধ হেরিটেজ সার্কিটের অন্যতম করিডর হিসেবে হেরিটেজ তালিকায় এই এলাকার নাম রাখা হয়েছে। গোটা এলাকায় পুরাতাত্ত্বিক খননের নির্দেশ দিয়েছে মোদী সরকার। হিন্দুধর্মের পীঠস্থান রূপে ভাদনগরকে তুলে ধরার চেষ্টা চালু হয়েছে। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে কাশী ও ভাদনগরের মধ্যে প্রাচীন সম্পর্কের খোঁজে প্রকল্প শুরু করেছে কেন্দ্র। বিএইচইউয়ের ইতিহাসবিদ, দার্শনিক ও পুরাতাত্ত্বিকদের নিয়ে কমিটি তৈরি হয়েছে। তাদের কাজ, কাশী এবং ভাদনগরের মধ্যে প্রাচীনকালে সম্পর্ক উদ্ঘাটন। প্রকল্পের নাম দেওয়া হয়েছে, রিলেশনশিপ বিটুইন কাশী অ্যান্ড ভাদনগর সিন্স অ্যানসিয়েন্ট টাইমস। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের সঙ্গে সংস্কৃতিক মন্ত্রক ও গুজরাত সরকারের সংস্কৃতি দপ্তরের চুক্তি হয়েছে।
সংস্কৃতি মন্ত্রকের দাবি, প্রাচীন যুগে নাকি বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃতির প্রাণকেন্দ্র ছিল ভাদনগর। কেবল, তাই নয়, এও দাবি করা হচ্ছে আড়াই হাজার বছর আগে কাশী ও ভাদনগরের মধ্যে নাকি গভীর সম্পর্ক ছিল। প্রায় দেড় হাজার বছর আগে বৌদ্ধ সন্ন্যাসীরা সারনাথ থেকে ভাদনগর এসেছিলেন মথুরা এবং সাঁচী হয়ে। এই সব দাবি করেই, ফের একবার পুরাতাত্ত্বিক গবেষণা শুরু করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। এরপর বই লেখা হবে, মিউজিয়াম গড়া হবে।
চব্বিশের আগে মোদীকে মহাত্মা বানাতে চাইছে বিজেপি, তাই তথাকথিত মনীষীর জন্মস্থানকেও পীঠস্থান বানানোর প্রয়োজন! সেই কারণেই কি এমন চেষ্টা চলছে?