বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

ধাঁধা – গ্রামীণ মানুষের সাংস্কৃতিক মানসিকতার পরিচয়

June 8, 2023 | < 1 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জঙ্গলমহলের লোকজীবনে ছড়ার মতো ধাঁধাও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। কৃষিজীবী মানুষ কাজকর্মের শেষে পরিহাস রসিকতা ও অবসর বিনোদনের উপাদান হিসেবে ধাঁধাকে সাদরে গ্রহণ করেছে। এর মাধ্যমে মনোযোগ, অধ্যবসায় ও অনেক বেশি ধীশক্তি বাড়ানো যায়। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার পাঁচটি ব্লকে যেসব ধাঁধা প্রচলিত আছে তা আমাদের সংহত সমাজের উপকরণ নিয়েই চর্চিত। এখানকার সিংহভাগ মানুষ কৃষিজীবী হওয়ায় ধাঁধাতে কৃষি সংক্রান্ত উপকরণ বেশি দেখা যায়। ধাঁধার মধ্য দিয়ে এখানকার মানুষের সমাজ-অর্থনীতি প্রসঙ্গ উঠে আসে। ধাঁধাগুলির শ্রেণিবিভাজন করে পর্যালোচনা করা যায়

যেমন-

সাতভাতারি সাবিত্রী

পাঁচ ভাতারি এয়ো

ভাই ভাতারির বিয়ে হবে

বাপ ভাতারির জা- ও

(সাতভাতারি = স্বর্গ, মর্ত, পাতাল, পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর ও দক্ষিণ।

পাঁচভাতারি = দ্রৌপদী

ভাইভাতারি = সুভদ্রা, কৃষ্ণ ও বলরাম

বাপভাতারি = পৃথিবী)

ধাঁধাটি বলার সময় লোকজীবনে অশ্লীল শব্দ প্রয়োগেও কোনও দ্বিধাদ্বন্দ্ব প্রকাশ পায় না। বরং অশীল শব্দপ্রয়োগ করতেও এখানকার লোকজীবন সাবলীল মানসিকতার পরিচয় দিয়ে থাকে। বেশ বুদ্ধিদীপ্ত এই ধাঁধাতে পৌরাণিক প্রসঙ্গকে টেনে আনা হয়েছে। মহাভারতীয় কাহিনির পরিচয় যে লোকজীবনে ছড়িয়ে আছে তাও আমরা খুঁজে পাই।

সীমান্ত পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার লোকজীবনে মানুষ প্রকৃতির বিচিত্র বৈশিষ্টের মধ্যেই ধাঁধার বিষয় নিবন্ধ করেনি, পারিবারিক জীবনের দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যেও ধাঁধাকে বেশি ব্যবহার করেছে। সেইসঙ্গে গ্রামীণ মানুষের সাংস্কৃতিক মনটিও ফুটে উঠেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Riddles question, #Rural People, #Culture, #West Bengal, #village

আরো দেখুন