BJP-কে লোকসভা নির্বাচনে কড়া চ্যালেঞ্জ জানাতে ক্রমশই সঙ্গবদ্ধ হচ্ছে বিরোধীরা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সামনের বছর লোকসভা নির্বাচন। এর মধ্যেই বিজেপি বিরোধী দলগুলি একে অপরের সঙ্গে আলাপ আলোচনা শুরু করেছে যাতে তারা একজোট হয়ে নির্বাচনে লড়াই করে কেন্দ্রে ক্ষমতা থেকে বিজেপি’কে সরাতে পারে।
যেমন, তামিল নাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন ২০২৪-এর নির্বাচনে বিজেপিকে পরাজিত করতে সারা দেশে অবিজেপি দলগুলিকে তাদের মতপার্থক্য ঝেড়ে ফেলে সঙ্গবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বৃহস্পতিবার চেন্নাইয়ে এক জনসভায় বলেন, অন্যান্য দলের মধ্যেকার মতপার্থক্যকে কাজে লাগাতে বিজেপি দেশের যে কোনও প্রান্তে যাবে৷ কিন্তু আমাদের সেই কৌশলের শিকার হওয়া উচিত নয়।
আবার বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব শুক্রবার বলেন, বিজেপি যতই বিভাজনের রাজনীতির চেষ্টা করুক না কেন, নীতীশ কুমার কিংবা লালুপ্রসাদ যাদবের মতো নেতারা যখন সামনে রয়েছেন, তখন ওসব পরোয়া করার কোনও প্রশ্নই আসে না। মোদিকে উদ্দেশ করে তাঁর কটাক্ষ, ‘মনে হচ্ছে কেন্দ্রের মসনদে একজন স্বৈরাচারী শাসক বসে রয়েছেন, আর আমরা সবাই তাঁর আদেশ মানতে বাধ্য। সংবিধান পর্যন্ত মানা হচ্ছে না। বিজেপি যদি আবার ক্ষমতায় আসে, তাহলে দেশ ধ্বংস হয়ে যাবে।’ কেন্দ্রের বিজেপি সরকার নতুন করে ইতিহাস লেখার চেষ্টা করছে বলেও তোপ দাগেন তেজস্বী।
সম্প্রতি তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন নীতিশ কুমার, অখিলেশ যাদব, অরবিন্দ কেজরিওয়ালরা। এর আগে তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্তালিনের সঙ্গে কথা হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। নীতিশ কুমারের সঙ্গে বৈঠকের পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছিলেন, জয়প্রকাশ নারায়ণের আন্দোলনের মতো বিজেপিকে সরানোর উদ্যোগ শুরু হোক বিহারের মাটি থেকেই। তাঁর কথায়, “প্রথমে আমাদের এই বার্তাটা দিতে হবে যে আমরা সবাই একসঙ্গে আছি। আমাদের কোনও ব্যক্তিগত স্বার্থ নেই। আমরা চাই বিজেপি শূন্য হয়ে যাক। কোনও কাজ না করেই বিজেপি শুধুমাত্র মিথ্যা কথা বলে আর ভুয়ো ভিডিও বানিয়ে হিরো হয়ে গেছে।’’
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, কেন্দ্রে বিজেপি বিরোধী জোট গঠনের যে উদ্যোগ বা বৈঠকগুলোর কথা আমরা জানতে পারছি সংবাদ মাধ্যমে, তার বাইরে নিয়মিতই আলোচনা, যোগাযোগ থাকছে বিরোধী দলগুলো মধ্যে। আবার বিজেপি-বিরোধী দলগুলো যেসব রাজ্যে সরকার চালায়, তাদের মধ্যেও সরকার পরিচালনা নিয়েও নানা স্তরে আলোচনা চলছে আগে থেকেই। সেই প্রক্রিয়াগুলোকেই কী করে একটা ফোকাসে, অর্থাৎ, বিজেপি-বিরোধিতার জায়গাটাকে মূল লক্ষ্য করে তোলা যায়, সেটা নিয়েই এখন আলোচনা চলছে।
আবার অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষক মনে করছেন, প্রতিটা বিরোধী দলের কাছেই একটা অস্তিত্বের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। সবাই অনুভব করছে বিজেপি তাদের জন্য একটা বিপদ। সেটা যেমন কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে ব্যবহার করে বিরোধী দলীয় নেতা-নেত্রীদের তদন্তের আওতায় আনার ঘটনাগুলোর জন্য, তেমনই বিজেপির হাতে থাকা বিপুল অর্থভাণ্ডারের জন্যও। তাই বিরোধী দলগুলো নিজেদের বাঁচাতে সব মতপার্থক্য ভুলে জোটবদ্ধ হয়ে লোকসভা নির্বাচনে লড়তে চাইছেন।