মন্ত্রিসভা সাক্ষী গোপাল! ৯ আমলাকে নিয়ে সরকার চালাচ্ছেন মোদী-শাহ?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দেশের মন্ত্রিসভা চালাচ্ছেন আমলারা, মোদী-শাহ ছাড়া বাকি সব্বাই শ্রেফ সাক্ষী গোপাল! এমনই অভিযোগ উঠছে। কেন্দ্রের মন্ত্রীরাই মোদী সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের মন্ত্রীদের দেখা পান না। সাক্ষাতের উদ্দেশ্যে গেলেও শীর্ষস্তরের মন্ত্রীরা দেখা করেন না। চা পান করেই বিদায় নিতে হয় অন্যান্য মন্ত্রীদের। কারণ, মোদীর মন্ত্রিসভায় সকলেই সমান নন। শীর্ষ মন্ত্রীদের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্ট ছাড়া সাধারণ মন্ত্রীরাই দেখা করতে পারেন না। রাজধানীর অলিন্দে খবর ঘোরাফেরা করে, মোদী সরকারের ভরকেন্দ্র হলেন ৯ জন আমলা। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ছাড়া, কোনও কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরই একক সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা নেই বলে শোনা যায়। এতে মোদী সরকার ও বিজেপির অন্দরে ক্ষোভ বাড়ছে।
মোদী সরকারের নানান প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ, ও নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে ৯ জন আমলাই নির্ণায়ক ভূমিকা নেন। তাঁদের মতামতই নাকি শেষ কথা, এমন শোনা যায়। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল, প্রধানমন্ত্রীর প্রধান সচিব পি কে মিশ্র, ক্যাবিনেট সচিব রাজীব গউবা, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিব অজয় ভাল্লা, রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস, এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের সুপ্রিমো সঞ্জয় মিশ্র, রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালিসিস উইংয়ের নয়া চিফ প্রধানমন্ত্রীর আরেক প্রিয় অফিসার রবি সিনহা, কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল জি সি মুর্মু এবং পূর্বতন নীতি আয়োগ প্রধান বর্তমানে জি টুয়েন্টির শেরপা; এই ৯ জন আধিকারিকই আড়ালে দেশের সরকার চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এদের সমন্বয় রক্ষাকারী ও চালিকাশক্তি হলেন অজিত দোভাল। মোদীর মার্কিন সফরের আগে আমেরিকা গিয়ে এবং মার্কিন নিরাপত্তা উপদেষ্টা ও বিদেশসচিবের সঙ্গে আলোচনা করে সফরের অ্যাজেন্ডাসহ প্রায় সব কিছুই ঠিক করেছেন অজিত দোভাল, প্রয়োজন পড়েনি দেশের বিদেশমন্ত্রীর!
বিগত কয়েকবছরে সরকারের সব নীতি, সিদ্ধান্তের নেপথ্যে এই নয়জনের টিম, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রকের অফিসাররা বহু ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট দপ্তরের মন্ত্রীর বদলে এই অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। অর্থমন্ত্রক বিগত এক বছরে একাধিকবার রেপো রেট অস্বাভাবিক হারে বৃদ্ধি নিয়ে আপত্তি করেছিল। কিন্তু রিজার্ভ ব্যাঙ্ক মানেনি। একইভাবে এনআইএ, সিবিআই, সিভিসির মতো দপ্তরগুলির তুলনায় এখন ইডির ক্ষমতা এখন বহু মাত্রায় বেশি। সবই এই আধিকারিকদের টিমের কল্যাণে। বাজেটের আগে এই আধিকারিকরা প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের সঙ্গে নানান মন্ত্রকের পারফরম্যান্স নিয়ে আলোচনা করে, তারপর বরাদ্দ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অর্থাৎ মোদীর মন্ত্রিসভায় বাকি মন্ত্রীদের ভূমিকা ওই সাক্ষী গোপালের মতোই! তাঁরা কেবল হ্যাঁ তে হ্যাঁ মেলানোর ভূমিকা পালন করেন।