মাটির মানুষ ছিলেন ব্র্যান্ড কানন দেবী
কানন বালা বা কানন দেবী – যাই বলুন তিনি ইন্ডাস্ট্রির জননী। নায়িকা, গায়িকা, প্রযোজক, অভিভাবক কত কি। মহাতারকা হয়েও স্টারডমের পরোয়া করতেন না কানন দেবী। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের বোনঝির স্বামী একবার স্টুডিও থেকে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়কে আনতে গেছিলেন। তখনও শ্যুট চলছে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের। ভদ্রলোককে একটা সোফায় মেক আপ রুমে বসতে দেওয়া হয়েছে। ওপরে পাখা ঘুরছে। তিনি অপেক্ষা করছেন সাবিত্রী দেবীর জন্য।
হঠাৎ এক বয়স্ক ভদ্রমহিলা ঘরে ঢুকে এলেন। খুব গরমকাল তখন। ঘরে ঢুকে ভদ্রমহিলা বললেন ঐ ভদ্রলোককে, ‘বাবা এই পাখার তলায় একটু বসবো, খুব গরম পড়েছে।’ ভদ্রলোক বলেছেন, ‘হ্যাঁ বসুন।’ ভদ্রমহিলা সোফায় বসা দূর, বসে পড়লেন সটান মাটিতে। বাড়ির মা মাসি ঠাকুমারা যেমন মাটিতে বসেই আরাম করেন সেরকমই বসে পড়েছেন। কিছুক্ষণ বাদে ঘরে প্রবেশ শ্যুটিং সেরে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের।
বোনঝির স্বামী বললেন ‘চল তোমায় নিতে এসছি।’ সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় সে কথা শুনবেন কি ঐ মাটিতে বসা ভদ্রমহিলাকে দেখে হতবাক…। সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায় বলে উঠল ‘একি কাননদি তুমি মাটিতে বসে? ওঠো ওঠো।’ ভদ্রলোক ঐ শুনে দিশেহারা। কি ভুল করলেন। চোখের সামনে মহাতারকা কানন দেবী। চিনতেই পারেননি। তাঁকে পায়ের কাছে বসতে দিয়েছেন। দু’জনেই লজ্জায় দিশেহারা।
কানন দেবী বললেন, ‘থাম তোরা বাছা! গরম লাগছিল তাই মাটিতে পাখার তলায় ঠান্ডায় বসেছি। মেলা ঝামেলা করিস নে তোরা। বল শ্যুটিং কেমন করলি।’ তারপর হাসি আড্ডা গল্প। মধুরেণ সমাপয়েৎ।
এটাই হল কাননদেবীর আন্তরিকতা অচেনা মানুষকেও আপন করে নেওয়া। স্টারডম ঝেড়ে ফেলে বাস্তবের মাসিমা পিসিমা হয়ে ওঠা।