কতটা মসৃণ ছিল কাদম্বিনী দেবীর চিকিৎসক হয়ে ওঠার পথ?
ঊনবিংশ শতাব্দীতে চার দেয়ালের বাইরে বের হওয়া নারীদের জন্য ছিল পাপ। সেই সময়ের মেয়ে হয়ে এই ‘অচলায়তন’-কে যিনি বুড়ো আঙ্গুল দেখান, তিনি কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। ভারত তথা এশিয়ার প্রথম প্র্যাক্টিসিং নারী চিকিৎসক। কিন্তু এই সাফল্যের পথ একেবারেই মসৃন ছিল না। তিনি হয়ে ওঠেন তৎকালীন সমাজের চক্ষুশূল। সেই রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে এগিয়ে গেছেন কাদম্বিনী।
চিকিৎসক হয়েও কাদম্বিনীকে হতে হয়েছে বহু অপমানের শিকার। সমাজের প্রশ্ন ছিল, একজন মহিলা কিভাবে ডাক্তার হয়? এই ধারণাকেই চ্যালেঞ্জ করেছিলেন তিনি। বিশ্বকে দেখিয়েছিলেন নারীশক্তির রূপ।
তিনি বহুবার হিন্দু রক্ষনশীল সমাজের দ্বারা আক্রান্ত হয়েছিলেন। পেশা জীবনেও বহু ব্যাপারে বাংলার প্রথম নারী হিসেবে রেকর্ড করা কাদম্বিনীকে অনেক বাধার সম্মুখীন হতে হয়। তাঁকে পরোক্ষ ভাবে ‘বেশ্যা’ আখ্যা দিয়েছিলেন ‘বঙ্গবাসী’ পত্রিকার ডাকসাঁইটে সম্পাদক মহেশচন্দ্র পাল। একটি কার্টুন ছেপে কাদম্বিনীকে ‘স্বৈরিণী’র সঙ্গে তুলনা করেন। কারণ কাদম্বিনী নাকি মোটেই ঘরোয়া নন।
কিন্তু কাদম্বিনী ছেড়ে দেবার পাত্রী নন। সম্পাদকের বিরুদ্ধে মানিহানির মামলা করেন। বঙ্গবাসী পত্রিকার সম্পাদক মহেশচন্দ্র পালের ১০০ টাকা জরিমানা আর ৬ মাসের জেল হয়। সেই সময় এই ধরনের মামলা করা, বিশেষ করে একজন দাপুটে পুরুষ সম্পাদকের বিরুদ্ধে, কোনো নারীর পক্ষে মোটেই সহজ ছিল না।
বার বার তাঁকে হতে হয়েছে লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার। অনেক বাধা অতিক্রম করেই তিনি হয়ে উঠেছিলেন বাংলার প্রথম মহিলা চিকিৎসক।