দেশ বিভাগে ফিরে যান

২০২৪-এ বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA –কে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত টিম INDIA

July 18, 2023 | 3 min read

২০২৪-এ বিজেপি নেতৃত্বাধীন NDA –কে চ্যালেঞ্জ জানাতে প্রস্তুত টিম INDIA

নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: ১৮ জুলাই অর্থাৎ মঙ্গলবার দেশের ২৬টি বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতারা ভারতীয় জনতা পার্টি’র (BJP) বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াইয়ের বিষয়ে সু্স্পষ্ট ইঙ্গিত দিলেন।

২৩ জুন পাটনার বৈঠকে বিরোধী দলগুলির মধ্যে প্রাথমিক আলোচনার পরে এবার বেঙ্গালুরুর ‘তাজ ওয়েস্ট এন্ডে’ বিরোধী দলগুলির শীর্ষ নেতৃত্বরা বৈঠকে বসলেন। পাটনায় অংশগ্রহণকারী দলের সংখ্যা ছিল ১৭, বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৬।

পশ্চিমবঙ্গ এবং কেরলের মতো কয়েকটি রাজ্যে বিরোধীরা যে জোটবদ্ধভাবে লোকসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার অবস্থায় নেই, এই সত্যটা এই বৈঠকে কোনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি। বিরোধী দলগুলির নেতারা সংসদের আসন্ন বাদল অধিবেশনে তাদের ঐক্য প্রদর্শন করতে সর্বসম্মত হয়েছেন এবং লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি বিরোধী সমমনস্ক দলগুলি যাতে অভিন্ন ন্যূনতম কর্মসূচি নিয়ে এগোতে পারে, তার জন্য বেঙ্গালুরুতে সবিস্তারে আলোচনা হয়েছে বলেও জানা গিয়েছে।

বিরোধীদের জোটবদ্ধতার মোকাবিলায় বিজেপিও তাদের তৈরি ২৫ বছরের পুরোনো এনডিএ জোট পুনরুজ্জীবিত করতে উদ্যোগী হল। আজ মঙ্গলবার দিল্লিতে অশোক হোটেলে দেশের ৩৮টি দলের নেতাদের বৈঠক ডাকা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সেই বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন। যাইহোক, তেলুগু দেশম পার্টি, জনতা দল (সেকুলার) এবং শিরোমণি আকালি দল (বাদল) এর মতো এর প্রাক্তন ‘মিত্ররা’ এখন এনডিএ-তে থাকার বিষয়ে নিশ্চিত নয়। ফলে, এই বৈঠকে সম্ভবত বিজেপিরই প্রাধান্য থাকছে। যদিও বিজেপি দাবি করেছে, বৈঠকে ৩৮ টি দলের অংশগ্রহণের সম্ভাবনা রয়েছে, তবে বর্তমান এনডিএ-এর বেশিরভাগ অংশ হল বিভিন্ন রাজ্যের জাতপাত-বর্ণ-ভিত্তিক ছোট দল, উত্তর-পূর্ব রাজ্যগুলির কিছু আঞ্চলিক দল, শিবসেনা ও জাতীয়তাবাদী কংগ্রেস পার্টি। লোক জনশক্তি পার্টি (রামবিলাস)-র প্রতিনিধিরা বৈঠকে রয়েছেন। অন্য দিকে, মুম্বই থেকে দিল্লিতে বৈঠকে যোগ দিতে এসেছেন মহারাষ্ট্রের উপমুখ্যমন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা অজিত পওয়ার, মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডে।

বেঙ্গালুরুতে বিরোধী দলগুলির দুই দিনের এই বৈঠকে একতাবদ্ধ হওয়ার তাগিদই ছিল মুখ্য। সে জন্যই বোধ হয় বৈঠক স্থলসহ সর্বত্র ব্যানারে লেখা ছিল ‘ইউনাইটেড উই স্ট্যান্ড’। বৈঠকের পর নতুন জোটের নাম ঘোষণা করেন কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে। তবে এই জোটের চেয়ারপারসন কে হবেন, তা তিনি জানাননি। খাড়গে বলেন, জোট পরিচালনায় ১১ জনের সমন্বয় কমিটি গঠন করা হবে। মুম্বাই বৈঠকে তা চূড়ান্ত করা হবে।

আগামী বছর লোকসভা ভোটের মূল লড়াই হতে চলেছে ‘ইন্ডিয়া’র সঙ্গে ‘এনডিএ’র। আজ মঙ্গলবার বিজেপিবিরোধী ২৬টি দলের শীর্ষ নেতাদের বৈঠকে নতুন জোটের নাম ঠিক করা হয়েছে ‘ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্টাল ইনক্লুসিভ অ্যালায়েন্স’ বা ‘ইন্ডিয়া’।
সবাই যাতে একসঙ্গে অভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে এগোতে পারে, সে জন্য এদিন বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে। সেই কর্মসূচি তৈরিতে আলাদা কমিটি গঠন করা হতে পারে। কাজের সুবিধার্থে জোটের মূল কার্যালয় হবে দিল্লিতে।

এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে সঙ্গে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ‘ইউনাইটেড প্রোগ্রেসিভ অ্যালায়েন্স’ বা ‘ইউপিএ’ জোটের অবসান ঘটল। ২০০৪ সালে বিজেপি নেতৃত্বাধীন ‘ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক অ্যালায়েন্স’-এর (এনডিএ) মোকাবিলায় কংগ্রেস সেই জোট গড়ে তুলে কেন্দ্রে ক্ষমতায় এসেছিল।

বিজেপির উদ্যোগে এনডিএর বৈঠকের প্রসঙ্গ টেনে কংগ্রেস সভাপতি বলেন, ‘এত দিন ওরা জোটের কথা মুখেও আনেনি। একের পর এক শরিক জোট ছেড়েছিল। ওরা তোয়াক্কা করেনি। এখন আবার জোট বাঁধতে চাইছে। বোঝা যাচ্ছে, বিরোধীদের কতটা ভয় পাচ্ছে।’ এনডিএর শরিকদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘এসব দল কারা জানি না। এ-ও জানি না, ওই দলগুলো নিবন্ধিত কি না।’
বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে খাড়গের পর একে একে সব নেতাকে বক্তব্য পেশ করতে বলা হয়। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি বলেন, আজ থেকেই শুরু হলো লড়াই। বিজেপির উদ্দেশে তাঁর হুংকার, ‘এনডিএ কি ইন্ডিয়াকে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারবে? সবাই মিলে আমরা দেশকে বিপর্যয়ের হাত থেকে বাঁচাব।’
দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘দেশের মানুষ নরেন্দ্র মোদিকে সুযোগ দিয়েছিল। কিন্তু ৯ বছর ধরে মোদি সব দিক থেকে চূড়ান্ত ব্যর্থ। দেশের সবকিছু তিনি বিক্রি করে দিচ্ছেন। গোটা দেশে ছড়িয়ে দিয়েছেন ঘৃণা। এই দেশকে আমরাই বাঁচাব।’
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী বলেন, লড়াই বিজেপির সঙ্গে বিরোধীদের নয়। লড়াই বিজেপির আদর্শের বিরুদ্ধে চিরন্তন ভারতীয় আদর্শের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #Team India, #loksabha elections 2024

আরো দেখুন