দুয়োরানী মধ্যবিত্তরা? ঋণখেলাপি কর্পোরেট বন্ধুদের জন্যে এ কী করলেন মোদী?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঋণ নিয়ে তা না মেটাতে পারলেই দেশত্যাগ, সাফ কথায় পালানো; এই হয়ে দাঁড়িয়েছে মোদীর ভারতের ট্রেন্ড। কিন্তু এবার বিজয় মালিয়া, নীরব মোদি, মেহুল চোকসির মতো ঋণখেলাপি শিল্পপতিদের জন্য নয়া সুবিধা আনছে মোদী সরকার! ব্যাঙ্ক ঋণ না মেটালেও আর অপরাধী নয় কর্পোরেটরা। উল্টে, মোট ঋণের কমপক্ষে ৪০ শতাংশ মিটিয়ে তাদের দায়মুক্ত হওয়ার সুবর্ণ সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। অর্থমন্ত্রক এমন নির্দেশিকা দিয়েছে, আর নির্দেশিকা পেতেই এই নীতি নিয়ে সরকারি ব্যাঙ্কগুলি মাঠে নেমে পড়েছে। সাধারণ দেশবাসীর জন্য এমন কোনও নীতি নেই। মধ্যবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্তদের সেই মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ঋণ মেটাতেই হবে।
দাবি করা হচ্ছে, ব্যাঙ্কগুলির অনাদায়ী সম্পদের বোঝা কমানোর জন্য এটাই নাকি মোদী সরকারের নবতম ফর্মুলা। ব্যাঙ্ক ঋণ মেটান না, এরকম ব্যবসায়ী ও শিল্পপতির সংখ্যা কম নয়। কেউ কেউ নিজেদের দেউলিয়া ঘোষণা করেছে। আবার অনেকেই দীর্ঘদিন ধরে মামলা লড়ছেন ব্যাঙ্কের সঙ্গে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জমানো টাকার নয়-ছয় চলছেই।
বকেয়া ঋণের অন্তত ৪০ শতাংশ পুনরুদ্ধার করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। এ পরিকল্পনা কতকটা নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভাল গোছের। ব্যাঙ্কগুলির সম্মিলিত অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ প্রায় সাড়ে ৭ লক্ষ কোটি টাকা। ২০২২ সাল অবধি আদায় হয়েছে মাত্র ১ লক্ষ ৩০ হাজার কোটি। এই মুহূর্তে ৬ লক্ষ কোটির বেশি টাকা অনাদায়ী। এর ৪০ শতাংশ ফিরে পেলেই সরকার খুশ।
সুদসহ ঋণ যদি কোনওভাবেই ফেরত পাওয়ার সম্ভাবনা না থাকে, সেক্ষেত্রে বছরের পর বছর যাবৎ ঋণ মেটার আশায় বসে থাকার দরকার নেই। ৬০ শতাংশ মকুব করে দেওয়া হোক। বকেয়া ৪০ শতাংশ আদায়ের জন্য চেষ্টা করা হোক। এহেন সিদ্ধান্ত থেকে কার্যত স্পষ্ট হল, ঋণখেলাপি শিল্পমহলকে দোষী সাব্যস্ত করার পরিবর্তে মোদী সরকার সাহায্যের হাতই বাড়িয়ে দিচ্ছে।