দেশ বিভাগে ফিরে যান

মণিপুর নারীনির্যাতন কান্ডে নয়া মোড়! মহিলা কমিশন আগেই অভিযোগ পেয়েছিল?

July 21, 2023 | 3 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মণিপুর নিয়ে উত্তাল দেশ। সম্প্রতি প্রকাশ্যে এসেছে উত্তর-পূর্বের রাজ্যে কুকি সম্প্রদায়ের দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে রাস্তায় ঘোরানোর ঘটনার ভিডিও। যদিও ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি দৃষ্টিভঙ্গি। নারীনির্যাতনের ঘটনায় গোটা দেশ রীতিমতো উত্তাল, পরপর দু’দিন সাংসদ অধিবেশন উত্তাল হয়েছে। এবার জানা গেল, দুই মহিলাকে নগ্ন করে রাস্তায় ঘোরানো ও গণধর্ষণের অভিযোগ অনেক আগেই পেয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশন। ৪ মে-র ঘটনার প্রেক্ষিতে প্রায় এক-দেড় মাস আগেই জাতীয় মহিলা কমিশন অভিযোগ পেয়েছিল। অভিযোগ উঠছে, মোদী সরকারের নিয়ন্ত্রণাধীন মহিলা কমিশন নারী নির্যাতনের অভিযোগকে বিশেষ পাত্তা দেয়নি। বরং উপেক্ষা করেছিল বলাই শ্রেয়।

কয়েকটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি, ১২ জুন জাতীয় মহিলা কমিশনে নারী নির্যাতনের ঘটনায় লিখিত অভিযোগ জানানো হয়েছিল। কিন্তু অভিযোগের কোনও উত্তর মেলেনি। অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছিল কিনা তাও জানানো হয়নি। মণিপুরের দুই মহিলা এবং মণিপুরের জনজাতিদের জন্য কাজ করে এমন একটি সংস্থার বিদেশে অবস্থিত প্রধান কার্যালয় থেকে অভিযোগ জানানো হয়েছিল জাতীয় মহিলা কমিশনে। নির্যাতিতাদের সঙ্গে কথা বলেই অভিযোগ করেছিলেন অভিযোগকারীরা। মহিলা কমিশনের কমপ্লেন সেল এবং মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনকে মেল করে অভিযোগ জানানো হয়েছিল।

মোট তিন জন মহিলার উপর যৌন নির্যাতন এবং তাঁদের মধ্যে দু-জনকে নগ্ন করে হাঁটানোর অভিযোগ রয়েছে। জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন রেখা শর্মা শুক্রবার কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, মণিপুরে মহিলাদের উপর অত্যাচারের অভিযোগ অনেক আগেই তাঁদের কাছে এসেছিল।

জাতীয় মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন গোটা ঘটনার দায় সে’রাজ্যের বিজেপি সরকারে কাঁধেই চাপিয়েছেন। রেখা বলেন, গত তিন মাসে তাঁরা তিনবার মণিপুর সরকারের কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েছেন। কিন্তু কোনও জবাব মেলেনি।

গত ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুরের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করেই মণিপুরে অশান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। মণিপুর পুলিশের দাবি অনুযায়ী, এর পরের দিনই থৌবল জেলায় নংপোক সেকমাই থানার অদূরে দুই মহিলার উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ। ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে সুপ্রিমকোর্ট সক্রিয় হয়েছে, প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বেঞ্চ মোদী সরকার ও মণিপুর সরকারের কাছে রিপোর্ট তলব করেছে। ভিডিও প্রকাশ্যে আসাতেই সক্রিয় হয়েছে ডবল ইঞ্জিন মণিপুরের পুলিশ। সে’রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এন বীরেন সিংহ জানিয়েছেন, শুক্রবার সকাল পর্যন্ত চার জন অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নির্যাতিতাদের এক জন ৪ মের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, খুনের ভয় দেখিয়ে দুষ্কৃতীরা, তাঁদের জনসমক্ষে পোশাক খুলতে বাধ্য করেছিল। ১৮ মে কঙ্গপকপি জেলার বি ফাইনম গ্রামের প্রধানের সাহায্যে সাইকুল থানায় অভিযোগ জানিয়েছিলেন নির্যাতিতা। তিনি আরও জানান, দুষ্কৃতীদের হাতে একে-৪৭, ইনসাস, এসএলআরসহ আধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। গ্রামে ঢুকে তারা নির্বিচারে বাড়িতে আগুন ধরায়, মানুষ খুন করে।

এখানে প্রশ্ন উঠছে জাতীয় মহিলা কমিশনের ভূমিকায়। মণিপুরে মহিলাদের উপরে যথেচ্ছ অত্যাচার হয়েছে, অপহরণ, খুন, নির্যাতন, ধর্ষণের মতো অত্যাচার করা হয়েছে। কেউই রেহাই পায়নি। এমনকি পনেরো বছরের নাবালিকার উপরেও শারীরিক নিগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছে। সব অভিযোগই পেয়েছে জাতীয় মহিলা কমিশন। কিন্তু এতদিন আগে অভিযোগ পাওয়া সত্ত্বেও কেন চুপ ছিল জাতীয় মহিলা কমিশন? ভিডিও ভাইরাল হয়ে যখন গোটা দেশ উত্তাল তখন মহিলা কমিশনকে উদ্যোগ নিতে দেখা যাচ্ছে? তারপর তারা সরব হচ্ছেন? ডিজিকে দ্রুত পদক্ষেপের নির্দেশ দিচ্ছেন? প্রশ্নগুলো উঠতে আরম্ভ করেছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kuki women, #Manipur sexual violence, #Manipur violence

আরো দেখুন