এক পীরের নামেই সোনাগাছির নামকরণ?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সোনাগাছি এক নিষিদ্ধপল্লী, খাস কলকাতার অন্যতম প্রাচীন রেডলাইট এরিয়া! এশিয়ার অন্যতম বৃহত্তম যৌনপল্লী। কলকাতায় নিশিযাপনের বাবুয়ানি পাড়া এটি! ইতিহাস বলছে, সোনা গাজীর নাম থেকে সোনাগাছির জন্ম। এই গাজীর জীবন কেটেছে দাঙ্গা-হাঙ্গামা, মারামারি করে। মৃত্যুর পর তিনি হয়ে উঠেছিলেন পীর। সোনা গাজীর স্মৃতিতেই তাঁর বৃদ্ধা মা তৈরি করেছিলেন একটি মসজিদ যা সোনাগাজীর মসজিদ নামে প্রাচীন কলকাতায় পরিচিতি পায়। সোনাগাজীর কাছ থেকে রোগ নিরাময়ের জন্য ওষুধ নিতে আসতেন অন্ধ, খোঁড়া, কুষ্ঠরোগী ধনী, দরিদ্র সকলেই।
চিৎপুর অঞ্চলেই এই মসজিদ অবস্থিত ছিল, এরপর এই মসজিদের খ্যাতিতেই এই অঞ্চলের নাম হয়ে উঠেছিল সোনাগাজী। কালক্রমের যা হয়ে দাঁড়ায় সোনাগাছি, কলকাতার সবচেয়ে বড় নিষিদ্ধপল্লি। এই ঘটনার সঠিক সময়কাল জানা যায় না। কবে মসজিদ তৈরি হয়েছিল, সোনাগাজী কবে কলকাতায় এসেছিলেন তার কোন নির্দিষ্ট সময়ের হিসাব নেই। তবে আন্দাজ করা যায় ব্রিটিশ আধিপত্য শুরু হওয়ার কিছু আগের ঘটনা এটি।
মসজিদের এসেই রোগ নিরাময় হয়, এ খবর রটতেই মসজিদে রোগীদের ভিড় জমতে শুরু করল। নানান অতিপ্রাকৃতিক-অলৌকিক ঘটনার প্রচার দ্রুত ছড়িয়ে পড়ল। বন্ধ দরজার ভিতর থেকে অদৃশ্য সোনাগাজী প্রত্যেকের জন্য ওষুধ বলে দিতে লাগলেন। এভাবেই দিন কাটতে লাগল। মসজিদের নামেই রাস্তার নাম হয়েছিল মসজিদবাড়ি স্ট্রিট। সোনাগাজীর মা মারা যাওয়ার পর, একদিন হঠাৎ করেই সব অলৌকিক অতিমানবীয় কাণ্ড বন্ধ হয়ে গেল। সেই মসজিদ আর নেই। কিন্তু সোনাগাজী রয়ে গিয়েছেন কিছুটা বদলে, সোনাগাছি হয়ে।
বিভিন্ন কিংবদন্তি জড়িয়ে আছে সোনাগাজীর নামের সঙ্গে। কিন্তু সোনাগাজীর এসব কিংবদন্তি অনেকেই বিশ্বাস করেন না। অনেক ইমামও বিশ্বাস করতেন না। দাঙ্গা-হাঙ্গামার যেসব গল্প শোনা যায়, তাও অতিরঞ্জন বই আর কিছুই নয়।
ভাষ্য পাঠ: মধুরিমা রায়
সম্পাদনা: মোঃ রবিউল ইসলাম
তথ্য গবেষণা: সৌভিক রাজ