মণিপুর ইস্যুতে মোদীর বিরুদ্ধে সরব প্রাক্তন সেনা-আধিকারিকরা, কী বলছেন তাঁরা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ৮২ দিন অতিক্রান্ত, আজও উত্তাল মণিপুর। এবার প্রাক্তন সেনা আধিকারিকা মুখ খুললেন মণিপুর নিয়ে। হিংসা ঠেকাতে প্রশাসনের ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন তাঁরা। মোদী সরকার ও মণিপুরের ডবল ইঞ্জিন সরকারের বিরুদ্ধে, কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগ করছেন তাঁরা।
মণিপুরে কুকি সম্প্রদায়ের দুই মহিলাকে বিবস্ত্র করে হাঁটানোর প্রসঙ্গেও মোদীর রাজস্থান ও ছত্তিশগড়ে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের কথা টেনে আনাকেও আক্রমণ করছেন প্রাক্তন সেনা আধিকারিকরা।
প্রাক্তন নৌবাহিনী প্রধান ও ১৯৭১-র যুদ্ধের নায়ক অ্যাডমিরাল অরুণ প্রকাশ রবিবার টুইটে লেখেন, মণিপুরে হিংসা ও বর্বরতার ঘটনাগুলো ভয়াবহ। কর্তব্যে অবহেলা লজ্জাজনক। তিনি আরও লেখেন, তাঁরা নানান কথা শুনতে শুনতে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছেন। অযোগ্য সকলকে বরখাস্ত করুন, কিন্তু উত্তর-পূর্বে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ পুনরুদ্ধারের জন্যে সর্বান্তকরণে চেষ্টা করুন।
এর আগে ২১ জুলাই, প্রাক্তন নৌবাহিনী প্রধান টুইট করেছিলেন, ১৩ লক্ষ শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সশস্ত্র পুলিশ বাহিনী এবং ১৪ লক্ষ শক্তিশালী সেনাবাহিনী থাকা সত্ত্বেও কেন একটি রাজ্য দু-মাসেরও বেশি সময় ধরে হিংসা, ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনার শিকার হচ্ছে? তিনি প্রশ্ন করেছিলেন মণিপুর কি অসহায়?
একজন প্রাক্তন লেফটেন্যান্ট জেনারেল এক সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, মণিপুরে শান্তি ফেরাতে রাজ্য সরকার ও কেন্দ্র উভয়ই ব্যর্থ হয়েছে। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলার সম্পূর্ণ পতন ঘটেছে। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী বীরেন সিংয়ের ভূমিকা তদন্ত করা দরকার বলেও, জানান তিনি। নারী নির্যাতন নিয়ে সরকারের মুখে কুলুপ দেওয়া এবং নৃশংসতার ভিডিও প্রকাশ না হওয়া পর্যন্ত সরকারের নিষ্ক্রিয়তা, প্রশাসনের উদাসীনতার ইঙ্গিত বহন করে। এই ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই, মোদী মণিপুর, হিংসার ৭৯তম দিনে হিংসার বিষয়ে নীরবতা ভাঙতে বাধ্য হয়েছিলেন।
অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলেন, দেশের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা অন্যান্য রাজ্যে মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের কিছু ঘটনার উদাহরণ তুলে, মণিপুরের ভয়ঙ্কর অপরাধের সাফাই গাইতে ব্যস্ত। মণিপুরের ঘটনার সরলীকরণ করা হচ্ছে। অপরাধমূলক অভিপ্রায়ে ধর্ষণ এবং জনজাতিকে আক্রমণ তথা নির্মূলের অংশ হিসেবে উন্মত্ত জনতার সংখ্যালঘু মহিলাদের লক্ষ্য করে যৌন নিপীড়নের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে।
একজন প্রাক্তন ব্রিগেডিয়ার বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী যখন মণিপুরের ভয়াবহ ঘটনার বিষয়ে নীরবতা ভঙ্গ করে, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থানের সঙ্গে পরিস্থিতির তুলনা করলেন; মণিপুরের ভয়াবহ পরিস্থিতিতে এমন রাজনৈতিক বিবৃতি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ছিল। অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল বলেছিলেন, বীরেন সিংকে এখনও মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাচ্ছেন, এটাও দুর্ভাগ্যজনক। মণিপুরে আঠারো বছর বয়সী এক মহিলার গণধর্ষণের বিষয়ে একটি সংবাদপত্রের প্রতিবেদনের কথা উল্লেখ করে অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল এইচ.এস.পানাগ টুইট করেন, ‘আরেকটি ভয়াবহ ঘটনা! জাতির সামাজিক কাঠামো ছিন্নভিন্ন হয়ে গিয়েছে।’