বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

কোচবিহারের কুশান পালা-বাংলার লোকসাহিত্যের মলাটে বিস্মৃত এক অধ্যায়

July 26, 2023 | 2 min read

বাংলার লোকসাহিত্যের মলাটে বিস্মৃত এক অধ্যায়

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাংলার লোকসাহিত্যের মলাটে কোচবিহারের কুশান পালা যেন বিস্মৃত এক অধ্যায়। লোকসংস্কৃতির‌ই মধ্যেই সংরক্ষিত থাকে আঞ্চলিকতার রূপ-রস-গন্ধ। আর এই সংস্কৃতির মানচিত্রে লোকনাটকগুলি উত্তরবঙ্গে এখনও অনেক বেশি মৌলিক। অর্থনীতির পরিভাষায় যাকে বলে ‘ইনট্যানজিবল রিসোর্স।’

কোচবিহারের ‘কুশান পালা’ অধিকাংশ ধর্ম ও পৌরাণিক কাহিনীর উপর নির্ভর করে গড়ে ওঠে। উত্তরবঙ্গের লোকাচার ও সামাজব্যবস্থা ফুটে ওঠে এই কুশান গানে। সীমিত রসবোধে নির্মিত এই লোকনাটকগুলি তথা কুশান পালা লোক-সাংবাদিকতার একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ।

কোন রাজনৈতিক নেতা দুর্নীতিতে অভিযুক্ত, কোন রেশনে কেমন চাল পাওয়া যাচ্ছে, পাশ্ববর্তী গ্রামে কোনও অসুখ ছড়িয়ে পড়েছে কি না, এইসব কিছুই কুশান গানের সুরে পরিবেশন করা হয়। ‘কুশান পালা’র মূল গায়ক ‘গিদাল’— তার হাতে থাকে ‘দোতারা।’ ‘গিদালে’র সঙ্গে থাকেন ‘দোয়ারী।’ এই ‘পালার’ আকর্ষণের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে ‘ছোকরা’।

প্রথম দিকে কিশোর বয়সী পুরুষরাই মহিলা সেজে বৃত্তাকারে নেচে-নেচে গান করতেন। পরবর্তীকালে মেয়েরাই ওই ভূমিকায় দেখা যায়। মূল গায়ক ‘গিদাল’ পালাটি গেয়ে যায়, ‘দোয়ারী’ অভিনয় করে। ‘ছোকরা’রা হাসায়-কাঁদায়। গিদালের তৈরি করা গানে অনেক সময়ই জনপ্রিয় সিনেমা বা আধুনিক গানের সুর প্রয়োগ করা হয়। গিদালের সঙ্গে সমস্বরে গান গেয়ে ছোকরারা নাচে মত্ত হয়ে ওঠে।

মূলত পৌরাণিক কাহিনীর উপর ভিত্তি করে রচিত হয় পালাগানগুলি। তবে কিছু জায়গায় স্বরচিত কাহিনীও উপস্থাপিত হয়। কুশান গানের উল্লেখযোগ্য পালাগুলি হল, লক্ষ্মণের শক্তিশেল, দানবীর হরিশ্চন্দ্র, বেহুলার ভাসান ইত্যাদি। পালাগুলি মূলত শীতকালে গ্রামের খোলা মাঠে বা হাট-বাজারের এক কোণে খানিকটা খোলা জায়গায় পরিবেশিত হয়। গ্রাম্য ভাষায় রচিত কুশান পালাগুলি দর্শকরা বৃত্তাকার হয়ে বসে উপভোগ করেন ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#North Bengal, #Coochbehar, #Folk culture, #Kushan pala, #West Bengal

আরো দেখুন