কবে থেকে সংসদে বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাবে আলোচনা শুরু হবে, জেনে নিন
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাদল অধিবেশনের শুরু থেকেই মণিপুর ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য জানতে চেয়ে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে বিরোধীরা। তারা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে। লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা বিরোধীদের আনা অনাস্থা প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন। সূত্রের খবর, সোমবারই স্পিকার এবিষয়ে আলোচনার দিনক্ষণ জানিয়ে দিতে পারেন। আর আগামী ২ ও ৩ আগস্ট সংসদে অনাস্থা প্রস্তাবের উপর আলোচনা, বিতর্ক ও ভোটাভুটি হতে পারে। প্রাথমিকভাবে, মঙ্গলবার এই আলোচনার কথা থাকলেও প্রধানমন্ত্রীর মহারাষ্ট্র সফরের জন্যই তা পিছিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গিয়েছে।
লোকসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতার জন্য ২৭২ জন সাংসদের প্রয়োজন। বর্তমানে এনডিএ সরকারের সদস্য সংখ্যা ৩৩১। বিজেপির একাই আছে ৩০৩ সাংসদ। এর মানে হল যে সমস্ত নন-এনডিএ দলগুলো একত্রিত হলেও (যা খুবই অসম্ভব) বিজেপির কাছে এখনও অনাস্থা প্রস্তাবে জিতে যাওয়ার মত সংখ্যা রয়েছে। উলটোদিকে নতুন নাম ‘ইন্ডিয়া’ জোটের ১৪৪ জন সাংসদ রয়েছে। আর, এনডিএ এবং ইন্ডিয়া জোটের বাইরে থাকা ‘নিরপেক্ষ’ দল যেমন বিআরএস, ওয়াইএসআরসিপি, বিজেডি জোটের সম্মিলিত সাংসদ রয়েছে ৭০। দিল্লি অর্ডিন্যান্স ইস্যুতে রাজ্যসভায় ইতিমধ্যেই বিজেপিকে সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছে জগন্মোহনের দল ওয়াইএসআর কংগ্রেস। ফলে এক্ষেত্রেও তাঁরা বিজেপির পাশে দাঁড়াতে পারে।
ঐতিহাসিকভাবে একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে আলোচনা জোরদার করার জন্য অনাস্থা প্রস্তাব কৌশলগত হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। বিরোধীরা জানে যে তাদের কাছে যথেষ্ট সংখ্যা নেই। কিন্তু, তারপরও মণিপুরের পরিস্থিতি নিয়ে তাদের উদ্বেগগুলো সমাধান করতে সরকারকে বাধ্য করার লক্ষ্যে বিরোধীরা বাধ্য হয়ে অনাস্থা প্রস্তাব এনেছে।
১৯৬৩ সালে তৃতীয় লোকসভার সময় প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর নেতৃত্বাধীন সরকারের বিরুদ্ধে আচার্য জেবি কৃপালানি প্রথম অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপন করেছিলেন। প্রস্তাবের উপর বিতর্ক চার দিন ধরে ২১ ঘণ্টা স্থায়ী হয়েছিল। ৪০ জন সাংসদ এই প্রস্তাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন। তাঁর উত্তরে নেহেরু মন্তব্য করেছিলেন, ‘একটি অনাস্থা প্রস্তাবের লক্ষ্য সরকারে থাকা দলটিকে সরিয়ে দেওয়া এবং তার জায়গা নেওয়া। বর্তমান দৃষ্টান্তে এটা স্পষ্ট যে এমন কোনও প্রত্যাশা বা আশা ছিল না। তাই এই বিতর্ক, যদিও বেশ আকর্ষণীয় এবং লাভজনক ছিল, কিন্তু আমি মনে করি যে একটু বাস্তবতাহীনও ছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমি এই প্রস্তাব এবং এই বিতর্ককে স্বাগত জানিয়েছি। আমি অনুভব করেছি যে আমরা যদি এই ধরণের পর্যায়ক্রমিক পরীক্ষা করি, তবে এটি একটি ভালো ব্যাপার হবে।’ সর্বশেষ অনাস্থা প্রস্তাব ২০১৮ সালে টিআরএস প্রথম মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এনেছিল।