বিশ্ব ব্যাঙ্কের ঋণের ক্ষেত্রেও বাধা! বাংলাকে ভাতে মারতে মরিয়া মোদী সরকার?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ‘আমার সন্তান যেন থাকে দুধে-ভাতে’ এই লক্ষ্য নিয়ে রাজ্য সরকার চালু করেছিল একের পর এক জনকল্যানকর প্রকল্প, কিন্তু বাংলার প্রতি ধারাবাহিকভাবে মোদী সরকারের আর্থিক বঞ্চনার প্রেক্ষাপটে এখন রাজ্য সরকারের আধকারিকরা ভাবছেন ভাত দেওয়ার মুরোদ না থাকা সেই কিল মারার গোঁসাইয়ের কথা। অভিযোগ উঠছে, রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের প্রাপ্য অর্থ দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে কেন্দ্র, তার উপর স্বনির্ভরভাবে রাজ্য সরকার অর্থের ব্যবস্থা করলেও ছাড়পত্র দেওয়ার নামে ক্রমাগত বাধা দিয়েই চলেছে মোদী সরকার। এটাকে বাংলার অর্থনীতিকে পঙ্গু করার চক্রান্ত বলে মনে করছেন রাজ্য সরকারের কর্তারা।
এর আগে মুখ্যমন্ত্রী একাধিকবার অভিযোগ করেছেন, ১০০ দিনের কাজ, আবাস যোজনাশ, গঙ্গা-পদ্মার ভাঙন রোধে বরাদ্দ টাকা আটকে রেখে মোদী সরকার বাংলার মানুষকে ভাতে মারার চেষ্টা করছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকার কেন্দ্রের মুখাপেক্ষী না হয়ে নিজেরাই অর্থের সংস্থান করতে উদ্যোগী হয়। সেই মতো বিশ্বব্যাঙ্ক এবং এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের (AIIB) অর্থসাহায্যে ১৪০৩ কোটি টাকার প্রকল্প রূপায়ণের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল মমতার সরকার।
ঠিক হয়েছিল মালদহ, নদীয়া এবং মুর্শিদাবাদ জেলায় গঙ্গা-পদ্মার তীরবর্তী ভাঙন প্রবন ৩২.২৮ কিলোমিটার ৪১টি এলাকায় কাজ হবে। সেই কাজের অগ্রগতি সন্তোষজনক বলে জানিয়েছিল বিশ্বব্যাঙ্ক। কিন্তু বাধ সাধল মোদী সরকার। কারণ বিশ্বব্যাঙ্কের থেকে এই ঋণ পেতে গেলে কেন্দ্রের ছাড়পত্র প্রয়োজন। তাই ছাড়পত্রের জন্য রাজ্যের তরফে গত ১০মে কেন্দ্রকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ২০২০-২১ সাল থেকে এই দুই আন্তর্জাতিক সংস্থার অর্থসাহায্যে ২৮০০ কোটি টাকা খরচে সেচ প্রকল্পের কাজ চলছে বাংলায়। তারপরও অবশ্য মোদী সরকারের তরফে কোনও সদুত্তর মেলেনি।
জানা গেছে,কেন্দ্রের জলশক্তি মন্ত্রকে পাঠানো সেচ সংক্রান্ত ওই চিঠি এখনও আটকে রয়েছে। রাজ্যের সেচ মন্ত্রীর অভিযোগ, রাজনৈতিক কারণে কেন্দ্র অনুমোদন দেয় নি। ২০২৪ সালের আগে অনুমোদন দেবেও না বলে মনে করছেন তিনি।
প্রসঙ্গত, বিগত ১৫ বছরে নদীগর্ভে তলিয়ে গিয়েছে রাজ্যের প্রায় ২৮০০ হেক্টর কৃষিজমি। মানুষের ভিটেমাটি রক্ষার্থে গত ৫ মে মালদহে ভাঙন প্রবন এলাকার জন্য ১০০ কোটির তহবিল গড়ার ঘোষণার পাশাপাশি মুখ্যসচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু রাজ্য সরকারের মানবিক উদ্যোগ লক্ষ্য করা গেলেও বাংলার মানুষের জীবন-জীবিকা-বাসস্থান নিয়ে কোনও গুরুত্বই দিতে চাইছে না বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।