‘সুবিধাবাদী’ রাজনীতিকে বেছে নিয়েছে, ব্রিগেড থেকে CPIM-কে তোপ এই বাম দলের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দীর্ঘ ৩৫ বছর পর শনিবার ৫ই আগস্ট এসইউসিআইয়ের ব্রিগেড সমাবেশ হল। দলের প্রতিষ্ঠাতা ও প্রথম সাধারণ সম্পাদক শিবদাস ঘোষের জন্ম শতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে ব্রিগেডে সমাবেশের ডাক দিয়েছিল এসইউসিআই। দেশের ২৫টি রাজ্য থেকে ব্রিগেড ভরিয়েছিলেন দলের বহু কর্মী, সমর্থক।
সমাবেশের মূল বক্তা ছিলেন দলের সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ। এছাড়াও ছিলেন হরিয়ানার রাজ্য সম্পাদক সত্যবান, কর্ণাটকের নেতা কে রাধাকৃষ্ণ। এদিন দলের সাধারণ সম্পাদক বক্তব্য রাখতে গিয়ে শুরুতেই সিপিএমকে তুলোধনা করেছেন।
কেন এই মার্কসবাদী দল গঠন? সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক প্রভাস ঘোষ তাঁর বক্তব্যে ব্যখ্যা দিতে গিয়ে ৩৪ বছরের সিপিএমকে কার্যত ‘ধুয়ে’ দিয়েছেন তিনি। রাজ্য রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক হতে সিপিএম যে এখন ‘সুবিধাবাদী’ রাজনীতিকে বেছে নিয়েছে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় এদিন তা জানিয়ে দিয়েছেন।
সিপিআইএম প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, ‘ঐক্যবদ্ধ সিপিআই লোকসভায় সর্ববৃহৎ বিরোধী রাজনৈতিক দল ছিল। ১৯৬৪ সালের সিপিএম তৈরি হওয়ার পর তারা কেরল, ত্রিপুর ও পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় ছিল। ১৯৭৭ সাল থেকে একটানা ৩৪ বছর তারা বাংলার সরকার চালিয়েছে। আজ তাদের অবস্থা কী? বাংলায় নির্বাচনে শক্তি সঞ্চয়ের জন্য তারা কংগ্রেসের হাত ধরেছে। ক্ষমতার জন্য একজন পীরকে ধর্মনিরপেক্ষ সাজিয়ে তাঁর হাত ধরেছে।”’
কী কারণে এই সমাবেশের ডাক? তিনি বলেন,‘এসইউসিআই কখনও দুর্নীতি ও অন্যায়ের সঙ্গে কখনও আপোষ করেনি। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে। আমরা একক শক্তিতে আজও দাঁড়িয়ে রয়েছি, লড়াই করছি। সেই কারণেই আজকের সমাবেশের আয়োজন করা হয়েছে।” সেই সঙ্গে সিপিএমের প্রতি প্রবীণ এই কমিউনিস্ট নেতার কটাক্ষ – ‘আমরা দালালি করতে পারবনা। না খেয়ে মরে যাব, তবুও মাথা নিচু করব না।”
এসইউসিআই-কে অনেক বাম মনোভাবাপন্ন দল ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছিল। সে প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রভাসবাবু বলেন, ‘আমাদের যারা ব্যাঙের ছাতা বলত, তারাই আজ নিশ্চিহ্ন হওয়ার পথে। সিপিআই বলে আর কোনও পার্টি ক্ষমতায় নেই। আরএসপি, ফরওয়ার্ড ব্লকও ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে।’ তাঁর কথায়, ‘ক্ষমতায় আসতে একসময় জ্যোতি বসু, অটল বিহারী বাজপেয়ি এবং ভিপি সিং এই ময়দানে মিটিং করেছিলেন। সেই পথে এসইউসি হাঁটবে না।’
দেশের কোনও রাজ্যে ক্ষমতায় না থেকেও একক শক্তিতে ২৫টি রাজ্যের বিভিন্ন অংশ থেকে নিয়ে আসা লোকজনের সমাবেশ এবং সেখানে আগাগোড়া সিপিএমকে আক্রমণ যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।