ব্যর্থ কেন্দ্র! মণিপুর হিংসা রোধে প্রাক্তন মহিলা বিচারকদের নিয়ে কমিটি সুপ্রিম কোর্টের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মণিপুর ইস্যুর সমাধানে কমিটি নিয়োগ করল সুপ্রিম কোর্ট। উত্তর পূর্বের এই রাজ্যে বিগত ৩মাস ধরে চলছে জাতি দাঙ্গা। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এ রাজ্যে এসেও আখেরে কোনও লাভই হয়নি। এহেন পরিস্থিতিতে হাইকোর্টের প্রাক্তন মহিলা বিচারকদের নিয়ে আজ সোমবার ৩ সদস্যের একটি কমিটি নিয়োগ করেছে দেশের শীর্ষ আদালত।
মণিপুরে জাতিগত হিংসার তদন্ত, ত্রাণ ও প্রতিকারমূলক ব্যবস্থা, ক্ষতিপূরণ এবং পুনর্বাসনের তদারকি করবে এই কমিটি। জানা গেছে, জম্মু ও কাশ্মীর হাইকোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি গীতা মিত্তলের নেতৃত্বে ৩ সদস্যে সর্ব-মহিলা বিচার বিভাগীয় কমিটি সিবিআই এবং পুলিশ বিভিন্ন বিষয়ে তদন্তের পরীক্ষা করবে।
সূত্রের খবর, কমিটিতে থাকবেন প্রাক্তন বিচারপতি শালিনী জোশী এবং আশা মেননও। বিচারপতি জে বি পারদিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্রের সাথে ভারতের প্রধান বিচারপতি (সিজেআই) ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের একটি বেঞ্চ অবশ্য স্পষ্ট করে দিয়েছে যে কমিটি সিবিআইকে নিয়োগ করবে না তবে আইনের শাসন সুনিশ্চিত করবে।
আদালত আরও বলেছে যে এটি সিবিআই-এর উপর কোনও অভিযোগ আরোপ করছে না। তবে তদন্তকারী সংস্থাগুলির তদন্তগুলি বিশেষভাবে মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন ডিজিপি এবং এনআইএ অফিসার দত্তাত্রয় পদসালগিকারও দেখবেন।
আদালত জানিয়েছে, প্রতিটি জেলায় যেখানে হিংসতার ঘটনা ঘটেছে, সেখানে ছয়টি বিশেষ তদন্ত দল (এসআইটি) গঠন করা হবে। সিবিআই কে হস্তান্তর করা মামলার সংখ্যা বাড়বে কিনা তাও আজ জিজ্ঞাসা করেছে আদালত।
বর্তমানে প্রায় ১১টি মামলার তদন্ত করছে সিবিআই। মণিপুরে তদন্তের বিষয়ে সুপ্রিম নির্দেশ, প্রায় ৪২ টি এসআইটি থাকবে যারা সিবিআইতে স্থানান্তরিত না হওয়া মামলাগুলি দেখবে। সেই রাজ্য থেকে একজন পরিদর্শককেও এই এসআইটিতে আনা হবে। মণিপুর রাজ্যের বাইরের ৬ জন ডিআইজি পদমর্যাদার আধিকারিক ৬টি এসআইটি তত্ত্বাবধান করবে।
এর আগে ১ আগস্ট মণিপুরে উদ্ভূত আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে ব্যর্থ প্রশাসন এবং রাজ্য পুলিশকে তিরস্কার করেছিল সুপ্রিম কোর্ট। আদলতের পর্যবেক্ষণ ছিল, এ রাজ্য পুলিশ রাজ্য জুড়ে যৌন অপরাধ এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে ঘটতে থাকা অপরাধগুলির তদন্ত করতে অক্ষম এবং আইনশৃঙ্খলা যন্ত্রের সম্পূর্ণ বিপর্যয় রয়েছে। তাই আজ ৭ আগস্ট মণিপুরের ডিজিপিকে ব্যক্তিগতভাবে আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। শীর্ষ আদালত রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মণিপুর হিংসতার সাথে সম্পর্কিত ৬,০০০টি নথিভুক্ত এফআইআর সম্পর্কে বিশদ জানতে চেয়েছিল।
এদিন বেঞ্চ মণিপুরে হিংসতার বিষয়ে দাখিল করা আবেদনের একটি ব্যাচের শুনানি ছিল, যার মধ্যে কুকি-জোমি উপজাতির দুই মহিলার একটি আবেদনও ছিল, যাদের বিবস্ত্র করে ঘোরানো ও শ্লীলতাহানির একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছিল। ওই ভিডিয়োটির সত্যতা যাচাই করেনি দৃষ্টিভঙ্গি। ২৬ সেকেন্ডের ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসার পরেই দেশ জুড়ে তোলপাড় শুরু হয়। যা দেখে স্বতঃপ্রণোদিত মামলাও নথিভুক্ত করেছিল দেশের শীর্ষ আদালত। এসআইটি দ্বারা তদন্তের জন্য সুপ্রিম কোর্টে গিয়েছিলেন ঐ নির্যাতিতা মহিলারাই।