হরিয়ানায় গেরুয়া বাহিনীর বিদ্বেষমূলক ভাষণ অব্যাহত, মোদী নীরব!
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশিকাকে উড়িয়ে দিয়ে রবিবার এক জমায়েতে পুলিসের উপস্থিতিতেই উস্কানিমূলক বক্তব্যের ফোয়ারা ছোটালেন হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের নেতারা।
রবিবার হরিয়ানার নুহ জেলার পালওয়ালে যে মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করা হয়, সেখান থেকেই ‘শিক্ষা দেওয়ার’ দাবি ওঠে। যে মহাপঞ্চায়েতে যোগ দেন বজরং দল এবং বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শয়ে-শয়ে সমর্থক। হরিয়ানার পাশাপাশি উত্তরপ্রদেশ এবং রাজস্থান থেকেও অনেকে সেই মহাপঞ্চায়েতে আসেন। ওই মঞ্চ থেকে কোনও রাখঢাক না করে সরাসরি উস্কানিমূলক ভাষণও দেন একাধিক বক্তা। হিন্দু পরিবারের হাতে অস্ত্র তুলে দেওয়া, মুসলিম-অধ্যুষিত নুহ জেলা তুলে দিয়ে অন্য জেলার সঙ্গে মিশিয়ে দেওয়ার মতোও দাবি ওঠে। সরাসরি মুসলিমদের নাম না করে এক বক্তা তো আবার বলেন, ‘আপনি যদি আমাদের দিকে আঙুল তোলেন, আমরা হাত কেটে নেব।’ শুধু তাই নয়, ওই মহাপঞ্চায়েতে যোগ দেওয়া অনেকের হাতেই অস্ত্র ছিল।
মাত্র দু’সপ্তাহ আগেই বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ বাধে নুহতে। পরে তা পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতেও ছড়িয়ে পড়ে। মৃত্যু হয় ৬ জনের। এবার সেই শোভাযাত্রা ‘সম্পূর্ণ’ করার ডাক দেওয়া হল। নুহতে জমায়েতের অনুমতি দেওয়া হয়নি। এজন্য ৩৫ কিলোমিটার দূরে পালওয়াল জেলায় এদিন মহাপঞ্চায়েতের আয়োজন করেছিল একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। নুহ সংলগ্ন পালওয়ালের পণ্ডারি গ্রামে এই ধর্মীয় মহাসভায় ‘অসম্পূর্ণ’ শোভাযাত্রা কীভাবে শেষ করা হবে, তাই নিয়ে আলোচনা করা হয়। অনুষ্ঠানে কোনওরকম ‘ঘৃণা ভাষণ’ দেওয়া যাবে না বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে শর্ত দেওয়া হয়। কিন্তু সেই বিধিনিষেধকে থোড়াই কেয়ার করে বক্তাদের ভাষণে অবমাননাকর বক্তব্যের যেন ফুলঝুড়ি ছোটে। এক বক্তা বলেন, ‘আপনারা যদি একটি আঙুল তোলেন, আমরা আপনার হাত কেটে দেব।’ অন্য এক বক্তা আবার রাইফেলের লাইসেন্সের দাবি করে বসেন।
গোরক্ষার নাম করেই নুহ এবং রাজস্থান সংলগ্ন হরিয়ানার মেওয়াত এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে রেখেছে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং বজরঙ দল। একাধিক মুসলিম যুবককে কখনও পিটিয়ে কখনও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে গোরু পাচারকারী অভিযোগ তুলে। স্বঘোষিত গোরক্ষকদের বাহিনী তৈরি হয়েছে। প্রকাশ্যে সমাজমাধ্যমে তারা ছবি দিয়ে হুমকি দিলেও রাজ্য প্রশাসন নীরব থেকেছে।
মণিপুরের পাশাপাশি হরিয়ানা নিয়েও নীরব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বাধীনতা দিবসের আগে ‘হর ঘর তিরঙ্গা’ প্রচারে ব্যস্ত তিনি। বার্তাও দিয়েছেন দেশবাসীকে। প্রশ্ন উঠেছে, জাতীয় পতাকার মর্যাদা রক্ষায় তৎপর মোদী নাগরিকদের প্রাণ রক্ষায়, শান্তি রক্ষায় নিরুদ্বিগ্ন কেন।