বাংলাকে চমকানো ধমকানো যাবে না, কন্যাশ্রী দিবসের মঞ্চে একথা কেন বললেন মমতা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: “কন্যাশ্রীর মাধ্যমে বাংলার মেয়েদের জীবন আজ সুরক্ষিত”, সোমবার ধনধান্য স্টেডিয়ামে কন্যাশ্রীর অনুষ্ঠান থেকে মুখ্যমন্ত্রী এই দাবি করেন। হাওড়ার পাঁচলা থেকে মালদহের পাকুয়াহাট, নারী নির্যাতনের ঘটনায় সম্প্রতি রাজ্য ঘুরে গিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। মণিপুর কাণ্ডের সঙ্গে বাংলার তুলনা টেনে সরব গেরুয়া শিবির। সেই সময় মুখ্যমন্ত্রীর এই বক্তব্য যথেষ্টই তাৎপর্যপূর্ণ।
এদিন কন্যাশ্রী দিবসের মঞ্চে বক্তব্য রাখতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘‘বাংলাকে চমকানো ধমকানো যাবে না।’’ বক্তৃতার একেবারে শেষে মমতা স্লোগান দেন, ‘‘জয় বাংলা, জয় ইন্ডিয়া।’’
অষ্টম শ্রেণি থেকে স্নাতক পর্যন্ত ছাত্রীদের পড়াশোনায় সাহায্যের জন্য একাধিক বৃত্তি চালু করেছে রাজ্য। উচ্চশিক্ষায় ছাত্রীদের জন্য স্টুডেন্টস ক্রেডিট কার্ড দিচ্ছে রাজ্য সরকার। ওই কার্ডের মাধ্যমে পড়াশোনা বাবদ একজন ছাত্রী ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত ঋণ পেতে পারেন ব্যাঙ্ক থেকে।
হকি থেকে ফুটবল কিংবা বাল্য বিবাহ রুখে দেওয়া থেকে পরিত্যক্ত জল দিয়ে কীভাবে চাষ করা যায়, তা নিয়ে গবেষণা- সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নিজেদের কৃতিত্বের জন্য এদিনের মঞ্চে পুরষ্কৃত করা হয় ৩৯ জন কন্যাশ্রীকে। পেন, ছাতা, হাতঘড়ি এবং উৎসাহ ভাতা হিসেবে প্রত্যেকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঁচ হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।
স্বাধীনতা দিবসের আগের দিন কন্যাশ্রী দিবসের অনুষ্ঠানে নিজের সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় মমতা বলেন, ‘‘স্বাধীনতার যুদ্ধ, স্বাধীনতার লড়াই সবটাই কিন্তু বাংলা থেকে হয়েছিল। কোনও দিন যদি আন্দামান নিকোবর জেলে যাও, দেখবে যত নাম আছে, তার মধ্যে ৯০ শতাংশ নাম আছে বাংলার। আর বাদবাকি পঞ্জাবের। সুতরাং বাংলা যে স্বাধীনতার আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিল, সেটা নতুন করে বলার প্রয়োজন লাগে না।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার মেধা এগিয়ে চলুক। কেউ যেন থামাতে না পারে। বাংলাকে যেন কেউ চমক দেখাতে না পারে। বাংলাকে আমরা চমক দেখাব, উন্নয়নের সঙ্গে। বাংলাকে ধমকানি নয়, চমকানি নয়। বাংলা আমার কাছে আমার ঘর। আমার ঘর, মায়ের শাড়ির আঁচল, আম্মার শাড়ির আঁচল। হিন্দু, মুসলিম, শিখ, সবাই একসঙ্গে থাকবে। বাংলা সংহতির এক প্রধান কেন্দ্র।’’
নিজের লেখা কবিতাবিতান বই থেকে এদিন দুটি কবিতা পড়ে শোনান মুখ্যমন্ত্রী। কন্যাশ্রীদের কথায়, ‘আমার ঠিকানা’ এবং ‘মাটির ঘর’ কবিতা পাঠ করার সময় রীতিমতো আবেগপ্রবণ হয়ে উঠেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর কথাতেই ধরা পড়ে সেই আবেগ। কন্যাশ্রীদের উদ্দেশে বলেন, “আমার মনের ভাষার মধ্যে দিয়ে নিজের উপলব্ধি তুলে ধরলাম। যদি কখনও মনে হয়, একটু ভেবে দেখো।”