ই-বাস চালানো নিয়ে কী সুপারিশ করল বিধানসভার এস্টিমেট কমিটি?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: আরও বেশি সংখ্যায় ইলেকট্রিক বাস (ই-বাস ) নামানোর জন্য সরকারি পরিবহন সংস্থার কাছে সুপারিশ করেছে বিধানসভার এস্টিমেট কমিটি। কমিটির সুপারিশ, এই মুহূর্তে যে বাসগুলি চলছে, সেগুলিকে পর্যায়ক্রমে ই-বাসে পরিবর্তন করা হোক। উল্লেখ্য, বিধায়ক ডাঃ সুদীপ্ত রায়ের নেতৃত্বাধীন ২০ জন বিধায়কের ওই কমিটির সুপারিশ সম্প্রতি বিধানসভায় পেশ করা হয়েছে।
কমিটির মতে, এর ফলে জোড়া লাভ হবে; ডিজেলের ক্রমবর্ধমান মূল্যবৃদ্ধির থেকে রেহাই মিলবে। অন্যদিকে, ডিজেল গাড়ির জেরে হওয়া বায়ু দূষণও কমবে। কমিটির রিপোর্টে বলা হয়েছে, ডিজেলের মূল্যবৃদ্ধি জেরেই সরকারি পরিবহন সংস্থাগুলির আর্থিক অবস্থা খারাপ হচ্ছে। বাস চালানোর খরচ বাড়ছে। কিন্তু আয় বাড়েনি। রিপোর্টে বাসের ভাড়া অবিলম্বে বৃদ্ধির সুপারিশও করা হয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গ পরিবহন সংস্থা ২০১৯ সালে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার জন্য প্রথম ই-বাস নিয়ে আসে। একেবারে প্রাথমিক পর্যায়ে ২০টি বাস এসেছিল। পরবর্তীতে প্রায় ৮০টির মতো বাস আসে। ব্যাটারিতে ইলেকট্রিক চার্জ দিয়ে শীততাপনিয়ন্ত্রিত বাসগুলি বিভিন্ন রুটে চালানো হয়। ই-বাসের জন্যে পরিবহন সংস্থার বিভিন্ন ডিপোয় চার্জিংয়ের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়েছে। জানা গিয়েছে, বাস কিনতে তুলনামূলকভাবে বেশি ব্যয় হয়েছিল। বাস প্রতি দাম ৭৫ থেকে ৮৮ লক্ষ টাকার মধ্যে থাকে। কিন্তু বাসগুলি চালানোর খরচ অনেক কম। শীততাপনিয়ন্ত্রিত নয় এমন ডিজেল চালিত বাস চালাতে কিলোমিটার পিছু এখন খরচ হয় ৩৫ টাকা। শীততাপনিয়ন্ত্রিত ডিজেল চালিত বাসে প্রতি কিলোমিটারে খরচ হয় ৫০ টাকা। সেখানে শীততাপনিয়ন্ত্রিত ই-বাসের ক্ষেত্রে প্রতি কিলোমিটারে ব্যয় হয় মাত্র ১২ টাকা। বাংলায় প্রায় ১১০০ ই-বাস নামানোর জন্যে ইতিমধ্যেই একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করেছে রাজ্য সরকার। মনে করা হচ্ছে, চলতি বছরেই বাসগুলি রাস্তায় নামতে পারে।
ই-বাস চালানোর খরচ কম হলেও, বাসগুলির জন্য এককালীন খরচ রয়েছে। বেশ কিছুদিন চলার পর ব্যাটারির কর্মক্ষমতা কমতে শুরু হয়। শেষে ব্যাটারি পরিবর্তন করতে হয়। ব্যাটারি পরিবর্তনও ব্যয়। তবে তা সত্বেও ই-বাস চালানোর খরচ অনেক কম। বিধানসভার এস্টিমেট কমিটি সরকারি বাসের রক্ষণাবেক্ষণ করার বিষয়েও জোর দিয়েছে। অর্থাভাবে রক্ষণাবেক্ষণ ঠিকমতো হচ্ছে না, তাও উল্লেখ রয়েছে কমিটির রিপোর্টে। নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে, বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ও লাভজনক রুটে ঠিকমতো বাস চলছে না।