জানেন কী এ গ্রামের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো নয়, মনসা পুজো?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট ব্লকের বোয়ালদাড় পঞ্চায়েতের ফুলঘরা গ্রাম। এ গ্রামের শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো নয়, মনসা পুজো। প্রতি বছর চারদিন মা মনসার পুজোতেই মাতেন ফুলঘরার এ গ্রামের আবালবৃদ্ধবনিতা।
ফুলঘরার গ্রামবাসীদের কাছে শারদ উৎসবের অর্থ মনসাপুজোয় সামিল হওয়া। দুর্গা পুজোর রীতি মেনেই এখানে পূজিত হন মা মনসা।
কথিত আছে, প্রায় সাড়ে ৩০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে দুর্গার বদলে মনসার পুজোই চলে আসছে এই গ্রামে। আজও এখানে পুরনো রীতি-রেওয়াজের বিন্দুমাত্র বদল ঘটেনি। মা মনসার কাছে নিষ্ঠাসহ কিছু কমনা করলে তা পূরণ হয় বলেই গ্রামবাসীদের বিশ্বাস।
জনশ্রুতি, বহুকাল আগে ফুলঘরার বহু ব্যক্তি সর্পাঘাতে মারা গিয়েছিলেন। শুধু মানুষ নয়, সর্পাঘাতে মারা গিয়েছিল বহু গবাদি পশুও। সেই সময়ে এক গ্রামবাসী স্বপ্ন দেখেন, গ্রামে মনসা পুজো করলে কেউ আর সর্পাঘাতে মারা যাবেন না। আত্রেয়ী নদীতে একদিন স্নান করতে গেলে তিনিই মা মনসার কাঠামো ভেসে যেতে দেখেন। গ্রামবাসীরা সেই কাঠামো তুলে নিয়ে এসে মন্দিরে প্রতিষ্ঠা করে মনসাপুজো শুরু করেন। প্রথমে শ্রাবণ মাসেই এই পুজো শুরু হয়েছিল। পরে গোটা গ্রামে দুর্গাপুজো না হওয়ায় সময়টা বদলে শারদোৎসবের দিনগুলিতেই মা মনসার পুজো শুরু হয়।
পুজোর চারদিন চণ্ডী ও মনসামঙ্গলের গান হয় এখানে। এখানে মা মানসার এক পাশে থাকেন মা লক্ষ্মী। অপর দিকে সরস্বতী। পুজোর চার দিন নিয়ম মেনে গ্রামের সকলে নিরামিষ খান। পূজা প্রাঙ্গণে নাটক থেকে যাত্রাগান অনুষ্ঠিত হয়। পুজোর দিনগুলিতে ফুলঘরায় বসে বিরাট মেলা। জানা যায়, এই পুজো শুরু হওয়ার পর থেকে এই গ্রামে আর কেউ সর্পাঘাতে মারা যাননি।