উত্তরবঙ্গে নদী ভাঙন রোধে নীরব মোদী সরকার
নিউজ ডেস্ক,দৃষ্টিভঙ্গি: ভুটান থেকে উৎপন্ন বেশ কয়েকটি নদী উত্তরবঙ্গে প্রবেশ করে এবং বর্ষাকালে ডুয়ার্সের চা বাগান ও গ্রামগুলি প্লাবিত হয়। মালদা, উত্তর দিনাজপুর এবং দক্ষিণ দিনাজপুরের মতো জেলাগুলিতে, গঙ্গা, মহানন্দা, ফুলহার এবং কোশির মতো নদীগুলি বর্ষায় প্রবলভাবে প্রবাহিত হয়, যার ফলে উভয় তীরের বিশাল অংশ ভাঙনের কবলে পড়ে।
ফুঁসছে ফুলহার। নদী ভাঙনে আতঙ্কে মালদার একাধিক গ্রাম। একই ছবি রায়গঞ্জেও। সেখানে নাগর নদীর পাড় ভাঙছে। আতঙ্কে গ্রামবাসীদের ঘুম উড়েছে। বিগত কয়েক দিনে একশো একরের বেশি চাষের জমি তলিয়ে গিয়েছে নদীতে। আতঙ্কে গ্রাম ছাড়ছেন বাসিন্দারা। গত কয়েকদিনে, মালদা থেকে ভাঙনের খবর পাওয়া গেছে এবং বেশ কয়েকটি পরিবারকে নিরাপদ স্থানে স্থানান্তরিত করতে হয়েছে। মালদা ও মুর্শিদাবাদের বহু পরিবার ভাঙনে তাদের জমি ও বাড়ি হারিয়েছে।
প্রতি বছর প্রতিবেশী দেশ ভুটানে বৃষ্টির জেরে প্লাবিত হয় আলিপুরদুয়ার জেলা সহ জলপাইগুড়ি জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। এই বছর নদীর নাব্যতা কমে যাওয়ায় জেলার তোর্ষা, কালজানি শহ একাধিক নদীতে ভাঙন হয়েছে। ক্ষতির মুখে কয়েক হাজার মানুষ।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্নের মুখে কেন্দ্রের ভূমিকা। অভিযোগ ভাঙন রোধে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন্দ্রের বিজেপি সরকার। তারা এই বিষয়ে প্রয়োজনীয় অর্থ রাজ্যকে দিচ্ছে না। ফলে রাজ্যের তরফে ভাঙন রোধে কাজ করতে অসুবিধে হচ্ছে।
সম্প্রতি মালদা সফরে গিয়ে এই বিষয়ে নিজের ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র একটি পয়সাও দেয়নি। গঙ্গার জন্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা পাওয়ার কথা ছিল। ফারাক্কা ব্যারেজ প্রকল্প কর্তৃপক্ষও ভাঙন রোধে কিছুই করে না। অন্যদিকে, আমরা ধারাবাহিকভাবে সাধ্যমতো অর্থ বরাদ্দ করছি।’
মজার বিষয় হল, উত্তরবঙ্গের বেশির ভাগ ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাই এখন বিজেপি সাংসদের নির্বাচনী এলাকার মধ্যে পড়ে। যে সব এলাকা ভাঙন ও আকস্মিক বন্যার কবলে পড়েছে সেখান থেকে বিজেপির অনেক বিধায়কও নির্বাচিত হয়েছেন। অথচ এই সব এলাকার মানুষরা কেন্দ্রের থেকে কোনও অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। বলা ভাল এই সব এলাকায় ভাঙন রোধে কেন্দ্রের কোনও তৎপরতা নজরে আসে না। অথচ আগামী লোকসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে উত্তরবঙ্গ থেকেই বেশি আসন জেতার লক্ষ্য নিয়ে পুরদস্তুর মাঠে নেমে পরেছে বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব!