সর্বত্র অনিয়ম আর দুর্নীতি! মোদী সরকারের বিরুদ্ধে কী বলছে CAG রিপোর্ট?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সংসদে রিপোর্ট দিয়ে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ আনল ক্যাগ, মোদী সরকারের বিরুদ্ধে আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ আনছে কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল। সড়ক প্রকল্প, স্বাস্থ্য, গরিবের পেনশন, বা অযোধ্যা উন্নয়ন পর্ষদ, সর্বত্র আর্থিক অনিয়মের রিপোর্ট দিয়েছে ক্যাগ। রিপোর্ট পেশ হতেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে সমালোচনায় সরব হয়েছে বিরোধীরা। ক্যাগের রিপোর্ট উল্লেখ করে রাজ্যসভার বরখাস্ত হওয়া সাংসদ সঞ্জয় সিংয়ের অভিযোগ, জাতীয় সড়ক উন্নয়নের ভারতমালা প্রকল্পের অধীনে রাস্তা তৈরির নামে সাড়ে সাত লক্ষ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে। কেরল, অন্ধ্রপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, ওড়িশা, তেলেঙ্গানা, ছত্তিশগড়, গুজরাত, বাংলায় আদানি গোষ্ঠীকে রাস্তা তৈরির বরাত দেওয়া হয়েছে। লোকসভা ভোটের আগেই অস্ত্র এসে গিয়েছে ‘ইন্ডিয়া’ জোটের হাতে। রিপোর্ট তুলে ধরে মোদী বিরুদ্ধে ময়দানে নামার উদ্যোগ নিচ্ছে বিরোধীরা। বিরোধীদের বক্তব্য, মোদী সরকারের নয় বছরে কোনও দুর্নীতির কথা বলেনি ক্যাগ। এখন ক্যাগ মুখ খুলেছে। অর্থাৎ পরিস্থিতির বদল হচ্ছে।
মোদী সরকার কার্যত চাপে পড়েছে। কারণ অভিযোগগুলো আনছে খোদ সরকারি সংস্থা ক্যাগ। ফলে এই রিপোর্ট নস্যাৎ করতে পারছে না মোদী সরকার। গেরুয়া সোশ্যাল মিডিয়া সেলের প্রধান অমিত মালব্য ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করলেও, বিরোধীদের শাণিত আক্রমণে তা ধোপে টিকছে না। কংগ্রেস মুখপাত্র সুপ্রিয়া শ্রীনাত বুধবার বলেছেন, দ্বারকা এক্সপ্রেসওয়ে তৈরিতে হিসেবের চেয়ে ১৪ গুণ অতিরিক্ত টাকা খরচ করেছে মোদী সরকার। প্রতি কিমি রাস্তার জন্য ১৮ কোটি টাকা অনুমোদন হয়েছিল। কিন্তু প্রতি কিলোমিটারে ২৫০ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। ২৬ হাজার ৩১৬ কিমি জাতীয় সড়ক তৈরিতে কিলোমিটার প্রতি ১৫ কোটি ৩৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়েছে। ক্যাগ বলছে, কিলোমিটারে ৩২ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয় করেছে মোদী সরকার। পাঁচটি টোল ট্যাক্সের মাধ্যমে গাড়ির থেকে অতিরিক্ত ১৩২ কোটি টাকা আদায় করা হয়েছে। অযোধ্যা উন্নয়ন প্রকল্পেও আর্থিক নয়ছয়ের উল্লেখ রয়েছে ক্যাগ রিপোর্টে। ২০ কোটি টাকার কাজের বরাত এমন এক কন্ট্রাক্টরকে দেওয়া হয়েছে, যাঁর পূর্বে কাজের কোনও অভিজ্ঞতাই নেই।
বিরোধীরা বলছে, ক্যাগই জানিয়ে দিয়েছে, মোদী আমলে জণগণের টাকা লুট হয়েছে। ক্যাবিনেট কমিটি অন ইকনমিক অ্যাফেয়ার্সের প্রধান নরেন্দ্র মোদী। ক্যাগ রিপোর্টের পুরো ব্যাখ্যার দায়িত্ব নিতে হবে তাঁকেই। তৃণমূলের রাজ্যসভার নেতা ডেরেক ও’ব্রায়েনের প্রশ্ন, ক্যাগের রিপোর্ট নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কিছু বলবেন কি? আয়ুষ্মান ভারতের সাড়ে সাত লক্ষ সুবিধাভোগীর একটাই মোবাইল নম্বর কেন? ডিরেক্ট বেনিফিট ট্রান্সফারের নামে আর্থিক জালিয়াতির অভিযোগ আনছে তৃণমূল।