ভোটে আসতেই কি মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানতে মরিয়া মোদী সরকার?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ভোট বড় বালাই। তাই পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা ভোট দরজায় কড়া নাড়তেই, মূল্যবৃদ্ধি কমাতে উঠে পড়ে লাগল মোদী সরকার। দ্রব্য মূল্যবৃদ্ধি, সবজি, টমেটো থেকে শুরু করে চাল, ডাল, আটা, তেলসহ খাদ্যপণ্যের দর ঘিরে চরম দুর্ভোগে আমজনতা। গোটা দেশেই ছবিটা এক। যদিও পরিস্থিতির এই হাল স্বীকার করতে রাজি নয় মোদী সরকার। কয়েকদিন আগে অবধি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনসহ মোদী সরকারের মন্ত্রীরা বার বার দাবি করে এসেছেন, দেশের মূল্যবৃদ্ধি নাকি যথেষ্ট নিয়ন্ত্রণে। গত দেড় বছরের মধ্যে বিগত জুলাইয়ে মূল্যবৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ হতেই মোদী সরকার কপালে ভাঁজ পড়েছে। কারণ, পাঁচ রাজ্যের ভোট।
শিয়রে ভোট আসতেই নড়েচড়ে বসেছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। ভোট রাজনীতির ইস্যু হয়ে উঠেছে মূল্যবৃদ্ধি। অর্থসচিব টি ভি সোমনাথন স্বীকার করছেন মূল্যবৃদ্ধির হার উদ্বেগের। তাঁর কথায়, রিজার্ভ ব্যাঙ্ক সর্বদা চায় মূল্যবৃদ্ধির হার ৫ শতাংশের নীচে থাকুক। জুলাই মাসে মৃল্যবৃদ্ধির হার সাড়ে ৭ শতাংশে পৌঁছেছে। পরিসংখ্যান বলে দিচ্ছে পরিস্থিতি বিপজ্জনক। মূল্যবৃদ্ধির হার নামিয়ে আনতেই হবে। কিছু মাসের জন্যে মূল্যবৃদ্ধির হার যাতে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়, তা নিশ্চিত করতে হবে। তাঁর দাবি, ইতিমধ্যেই সরকার নাকি ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে। চলতি মাসের দশ তারিখ নির্ধারণ কমিটির বৈঠকের পর রিজার্ভ ব্যাঙ্ক ঘোষণা করেছিল, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মূল্যবৃদ্ধির হার ৬.৫ শতাংশের কাছাকাছি থাকতে চলেছে। ১৪ আগস্ট প্রকাশিত রিপোর্টেই দেখা গিয়েছে আরবিআইয়ের পূর্বাভাস মেলেনি। বোঝাই যাচ্ছে আগামী বেশ কয়েকটি মাসে গড়ে ৭ শতাংশের বেশিই থাকবে মূল্যবৃদ্ধির হার।
বারবার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে অন্যরকম দাবি করে আসা মোদী সরকার হঠাৎ করেই মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে চিন্তিত। এই প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের মত, উৎসবের মরশুম শুরু হওয়ার মুখে দীপাবলি পর্যন্ত তা চলবে। মূল্যবৃদ্ধির হারে লাগাম না টানলে, অর্থনীতির উপর চাপ বাড়বে। কারণ, দর বাড়লে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা ধাক্কা খায়। সেপ্টেম্বর, অক্টোবর এবং নভেম্বর মাসের উৎসবের কারণে প্রতি বছরই জিএসটি সংগ্রহ বৃদ্ধি পায়। মূল্যবৃদ্ধির জেরে তাও প্রভাবিত হবে। আগামী চার মাসের মধ্যে পাঁচ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন রয়েছে। বিজেপির বিরুদ্ধে বিরোধীদের অন্যতম ইস্যু যে মূল্যবৃদ্ধি, তা কার্যত নিশ্চিত। সেকারণেই মূল্যবৃদ্ধিতে লাগাম টানতে অতিসক্রিয় মোদী সরকার? উঠছে প্রশ্ন।