যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর তদন্ত: রীতিমতো রেটকার্ড ধরে ‘তোলাবাজি’ চলার অভিযোগ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: যাদবপুরের ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় আগেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ন’জনকে। তাঁদের গ্রেপ্তার করার পরেও পুলিশের নজরে ছিলেন হস্টেলের আরও কয়েক জন আবাসিক। তাঁদের মধ্যে ছিলেন প্রাক্তনীরাও। শুক্রবার সকাল থেকে তিন পড়ুয়াকে যাদবপুর থানায় ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছিল পুলিশ। শেষ পর্যন্ত তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এর ফলে ছাত্রমৃত্যুর ঘটনায় গ্রেপ্তারের সংখ্যা বেড়ে হলো ১২।
শুক্রবার যে তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা হলেন- রসায়ন বিভাগের প্রাক্তনী শেখ নাসিম আখতার, গণিত বিভাগের প্রাক্তনী হিমাংশু কর্মকার এবং কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র সত্যব্রত রায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, হস্টেলে নবাগত প্রথম বর্ষের ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, ‘কী কী ভাবে নির্যাতন চালাতেন হস্টেলের সিনিয়রদের একটা অংশ’। নতুন নতুন তথ্য সামনে আসছে। রীতিমতো রেটকার্ড ধরে ‘তোলাবাজি’র অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। পুলিসের দাবি, ধৃত সৌরভ চৌধুরী ও তাঁর গ্যাং হস্টেলের মধ্যে সংগঠিত কায়দায় তোলাবাজি চালাতো।
কীভাবে চলত তোলাবাজি? প্রথমে দেখে নেওয়া হতো নবাগত ছাত্রদের পরিবারিক ‘ইনকাম প্রোফাইল’। তারপর একটি নামের তালিকা তৈরি হতো। নামের পাশে লেখা থাকত ভিন্ন ভিন্ন টাকার পরিমাণ। সেই টাকা নেওয়া হতো অনলাইন মাধ্যমে। টাকা হাতে এলে শুরু হয়ে যেত ‘দাদা’-দের মোচ্ছব। সৌরভ ছাড়াও কয়েকজনের ফোনে থাকত ওই তালিকা। পুলিস সূত্রে আরও দাবি, এই র্যাোগিং গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ করা যেত না। কারণ, কোনও না কোনওভাবে খবর পৌঁছে যেত ‘দাদা’-দের কাছে। ‘টার্গেট’ হয়ে যেতেন সেই নবাগত পড়ুয়া।
পুলিসের দাবি, ১০ থেকে ১৫ জন বা তারও বেশি ছাত্র ও প্রাক্তনী এই গ্যাংয়ে ছিলেন। হস্টেলের এ-২ ব্লক ছিল তাঁদের মুক্তাঞ্চল। এর মধ্যেই চলত রাজনৈতিক ক্ষমতা দখলের প্রয়াসও। পুলিস জেনেছে, নবাগতরা যাতে ক্যাম্পাসের ক্ষমতাশালী ছাত্র সংগঠনে ভিড়ে না যায়, তার চেষ্টা চলত হস্টেলে। সেসব না মানলে জীবন আরও ওষ্ঠাগত করে তোলা হতো। হস্টেলে দিনরাত উচ্ছৃঙ্খল কার্যকলাপের ঠেলায় পাশের বিল্ডিংয়ের বাসিন্দারা সেদিকের জানলা বন্ধ রাখতে বাধ্য হতেন বলেও দাবি পুলিসের।