সিঁদুরে মাত্রাতিরিক্ত ভাবে মেশানো হচ্ছে সীসা, বাড়ছে বিপদ
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: এক চিমটে সিঁদুর হল কনের মাথার মুকুট। হিন্দুধর্মে, মহিলারা সিঁথিতে সিঁদুর পরেন। বলা হয় যে এতে স্বামীর দীর্ঘায়ু বাড়ে। পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপুজোয় সিঁদুর খেলা হয়, এর গুরুত্বও রয়েছে। কিন্তু কখনও কি ভেবে দেখেছেন যে সিঁদুর আমাদের পেটে বা শরীরের ভেতরে কোনওভাবে চলে গেলে কী হবে?
একাধিক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, বাজারচলতি সিঁদুরের ৮০ শতাংশ ক্ষেত্রেই মেশানো হচ্ছে মাত্রাতিরিক্ত সীসা। তা থেকে ত্বকের সমস্যা, ভুলে যাওয়ার রোগ, স্নায়ুর সমস্যা থেকে শুরু করে ডিএনএ ড্যামেজ, এমনকী ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। ‘ভেষজ’ সিঁদুর বলে বাজারে যা বিক্রি হয়, তার গুণগত মান নিয়েও খুব একটা নিশ্চিন্ত নন ত্বক বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, ফুল থেকে যেভাবে আবির হয়, সেভাবেই সিঁদুরে প্রাকৃতিক উপাদানের কথা ভাবা যেতে পারে। ড্রাগ কন্ট্রোল এবং শিল্পমহলের উচিত, অবিলম্বে ‘হেভি মেটাল’ ছাড়াই সিঁদুর তৈরি শুরু করা।
পাবমেডে (স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিখ্যাত গবেষণা পত্রগুলির মুক্ত সম্ভার) প্রকাশিত এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, ভারত ও আমেরিকায় কেনা সিঁদুরের প্রতি এক গ্রাম নমুনায় ১ মাইক্রোগ্রাম বা তার বেশি পরিমাণ সীসা মিলেছে। ভারতীয় সিঁদুরের প্রতি গ্রামে ২৮ মাইক্রোগ্রাম এবং আমেরিকায় কেনা সিঁদুরে ৫.৪ মাইক্রোগ্রাম সীসা পাওয়া যাচ্ছে। এই প্রেক্ষিতে আমেরিকার ইউএসএফডিএ এবং ভারতের ওষুধ ও কসমেটিক সংক্রান্ত শীর্ষ নীতি নির্ধারক কমিটি (ড্রাগ টেকনিক্যাল অ্যাডভাইজরি বোর্ড) সিঁদুর নির্মাতাদের সতর্ক করেছে। বিশিষ্ট ত্বক বিশেষজ্ঞ ডাঃ সুদীপ দাস বলেন, ‘সিঁদুর আমাদের সংস্কারের অঙ্গ। কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত লেডের বিপদ অগ্রাহ্য করা যাবে না। ড্রাগ কন্ট্রোল ও শিল্পমহলকে গুরুত্ব দিয়ে বিকল্পের খোঁজ করতে হবে। সিঁদুরখেলার পর অসংখ্য মহিলা ফি-বছর র্যা শ এবং অ্যালার্জির সমস্যা নিয়ে আসছেন। ক্যান্সারের আশঙ্কাও থাকে।’ বিশিষ্ট ক্যান্সার চিকিৎসক ডাঃ সুবীর গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ‘সংস্কার মেনে চলতে কাউকে বাধা দেওয়া যায় না। আবার সুস্বাস্থ্যও অপরিহার্য। গাঢ় করে সিঁদুর পরা অবস্থায় খেতে বসা বা হাতে সিঁদুর লাগার পর সাবান দিয়ে না ধোয়া সমস্যা ডেকে আনতে পারে। ওই সিঁদুর খাবারে মিশলে তা স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমার মতো ক্যান্সারের কারণ হতে পারে।’