কেন ক্ষমতা হারাচ্ছে অ্যান্টিবায়োটিক? কী বলছে ল্যানসেটে প্রকাশিত গবেষণাপত্র?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: জীবনদায়ী বিভিন্ন অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ ক্ষমতা হারাচ্ছে। এতে রোগ নিরাময়ের পথ কঠিন হয়ে পড়ছে। জানা যাচ্ছে, এর কারণ দূষণ। অ্যান্টিবায়োটিকের উপরে দূষণের প্রভাব নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছেন গবেষকরা। গবেষকদের দাবি, পরিবেশে দূষণের জেরে অ্যান্টিবায়োটিক আর মানবদেহের উপর কাজ করতে পারছে না। অ্যান্টিবায়োটিকের শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে, রোগনিরাময় ব্যাহত হচ্ছে। ল্যানসেট পত্রিকায় সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি গবেষণাপত্রও প্রকাশিত হয়েছে। এ ঘটনা গবেষণাপত্রে প্রকাশিত হতেই বিশেষজ্ঞ মহলে ঝড় উঠেছে। গোটা বিশ্বেই এমনটা হচ্ছে। ভারতের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশে যার মারাত্মক প্রভাব দেখা দিতে পারে।
অ্যান্টিবায়োটিকের কার্যক্ষমতা হ্রাসের অন্যতম দূষণ হিসেবে গবেষকদের দাবি, মুড়ি-মুড়কির মতো অ্যান্টিবায়োটিকের যথেচ্ছ ব্যবহার, মানুষের শরীরকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স করে তুলছে। অ্যান্টিবায়োটিকে আর রোগ সারছে না। গবেষকদের একাংশ এর দূষণ হিসেবে দূষণকে কাঠগড়ায় দাঁড় করাচ্ছেন।
দূষণে কেমন উপাদান আছে তার উপর দূষণের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। পিএম ১০-কে দূষণের চূড়ান্ত মাপকাঠি ধরা হয়। ওই মানের দূষিত বস্তু বাতাসে থাকলে চোখ, মুখে জ্বালা অনুভূত হয়। কিন্তু আয়তন আরও কমলে সেই দূষিত বস্তু অর্থাৎ দূষক ব্যাকটেরিয়াকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স করে তুলতে সাহায্য করে। ব্যাকটেরিয়া ও মানুষের জিনগত বদল ঘটছে। পরিচিত অ্যান্টিবায়োটিকগুলি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণের ক্ষেত্রে মানুষকে আর সাহায্য করতে পারছে না। গবেষকদের দাবি, এখন বিশ্বের বহু জায়গাতেই বাতাসে দূষকের উপস্থিতির মাপ হয়েছে পিএম ২.৫-এ। দূষণ সৃষ্টিকারী পদার্থের আয়তন মানুষের চুল প্রস্থর চেয়েও ৩০ গুণ কম। গাড়ি যাতায়াত, কাঠ পোড়ানো, কারখানা, বাড়ি থেকে দূষিত বস্তু সহজেই বাতাসে জমা হয়।
২০০০ সাল থেকে ১৮ বছর যাবৎ ১১৬টি দেশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করেছে গবেষকরা। ৯টি ব্যাকটেরিয়া ও ৪৩টি অ্যান্টিবায়োটিক নিয়ে পরীক্ষা চালিয়েছেন তাঁরা। তা থেকেই অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্সি ও দূষণের সম্পর্ক নিয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত পৌঁছেছেন। আরেকদল গবেষকদের দাবি, দূষণ ও অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স গড়ে ওঠার পদ্ধতি গবেষণাপত্রে স্পষ্ট নয়।