প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে রাজ্য-রাজ্যপাল কথা বলে উপাচার্য নিয়োগের নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরে রাজ্য-রাজভবন সংঘাত চরমে। জল সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত গড়িয়েছে। সোমবার সেখানে কার্যত ধাক্কার মুখে রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস।
সোমবার শুনানিতে উপাচার্য নিয়োগ মামলায় রাজ্যপাল তথা আচার্য সি ভি আনন্দ বোস-সহ সব পক্ষকেই পার্টি করার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি দুই সপ্তাহ পর। সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, এই সময়ের মধ্যে দু’পক্ষকে আলোচনায় বসে কোনও সমাধানসূত্র বের করা যায় কিনা, তা দেখতে হবে।
সোমবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্যকান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্টভাবে জানিয়েছে, কোনও বিশ্ববিদ্যালয় চালানোর জন্য স্থায়ী উপাচার্য থাকতে হবে। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না করে দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় চালানো যায় না। স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জন্য রাজভবন এবং নবান্ন একসঙ্গে কাজ করতে পারবে কিনা, তাও জানতে চায় শীর্ষ আদালত।
সেই মামলাতেই এদিন শীর্ষ আদালতের সাফ নির্দেশ, আচার্য তথা রাজ্যপাল এবং রাজ্য সরকার, উভয়ের আলোচনার মাধ্যমে উপাচার্য নিয়োগের উদ্যোগ নিতে হবে। কারণ, কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ই স্থায়ী উপাচার্য ছাড়া চলতে পারে না। আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের বেঞ্চে ফের মামলাটির শুনানি হবে।
সম্প্রতি যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়, কল্যাণী বিশ্ববিদ্যালয়-সহ রাজ্যের একাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অস্থায়ীভাবে উপাচার্য নিয়োগ করেন রাজ্যপাল তথা আচার্য। যদিও নবান্নের তরফে দাবি করা হয়। উচ্চশিক্ষা দপ্তরের সঙ্গে আলোচনা না করেই একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় আইন এবং বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের নিয়মের আওতায় সেটা করতে পারেন না রাজ্যপাল। আচার্যের নিয়োগ করা উপাচার্যদের বেতন বন্ধেরও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
একদিকে যখন উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক, তখন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী কেন আগেই প্রস্তাবিত তালিকা পাঠাচ্ছেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতি সূর্যকান্ত। এ প্রসঙ্গে রাজ্যের তরফে আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি জানান, ২০২৩ সালে রাজ্যের তরফে একটি নতুন বিল পাশ করা হয়েছে। সেখানে নিয়োগের প্রক্রিয়া কীভাবে হবে, তা স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। আচার্য সেই নিয়ম না মেনেই কাজ করছেন। এই বিল এখনও রাজ্যপালের কাছেই রয়েছে। সেটিতে এখনও সই করেননি রাজ্যপাল। এরপর শীর্ষ আদালতের ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, প্রতিষ্ঠানের স্বার্থে একসঙ্গে বসে কথা বলে কাজ করা হোক।