কীভাবে সোনার দোকানে ঘটল ডাকাতি? প্রকাশ্যে ঘটনার রুদ্ধশ্বাস ভিডিও
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: সোনার দোকানে ডাকাতির তদন্তে নেমে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য তদন্তকারীদের হাতে উঠে আসছে। মঙ্গলবার রানাঘাট ও পুরুলিয়ার দুটি সোনার দোকানে ডাকাতির ঘটনা ঘটে, তার আগে দুই জায়গাতেই রেকি করেছিল ডাকাতরা। রানাঘাটের ক্ষেত্রে তিনবার এমনটা হয়। পুরুলিয়ার ঘটনায়, দু’দিন আগে ওই দোকানে গিয়ে সোনার দুল বুকিং করেছিল দুষ্কৃতীরা।
তদন্তে উঠে এসেছে, জোড়া ডাকাতের নেপথ্যে রয়েছে বিহারের কুখ্যাত মাফিয়া সুবোধ সিংয়ের শাগরেদ শ্যামের। এই একদা শ্যাম ছিলেন সুবোধের ডানহাত। একাধিক স্বর্ণঋণপ্রদানকারী সংস্থায় ডাকাতির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে সুবোধের গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে। সে জেলে যাওয়ার পর, ত্রিশ যুবক নিয়ে নতুন দল খোলে শ্যাম। তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, রানাঘাট ও পুরুলিয়ায় ডাকাতির পিছনে শ্যামের দলের ছেলেরাই রয়েছে।
ট্রেনিংয়ের পর বাংলায় এই জোড়া ডাকাতি ছিল বিহারি গ্যাংয়ের প্রথম কাজ, এমনই উঠে এসেছে পুলিশি জেরায়। জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা ট্রেনেই রানাঘাট এসেছিল। স্টেশনের কাছেই রাখা ছিল ভুয়ো নম্বর প্লেটসহ বাইক। সেই বাইক নিয়েই দুষ্কৃতীরা স্বর্ণবিপণিতে যায়। ডাকাতির কায়দা দেখে পুলিশ আধিকারিকদের সুবোধ সিংয়ের গ্যাংয়ের কথা মনে পড়ে। তারপরই জানা যায়, শ্যামের কথা। শ্যামের সঙ্গে লোকাল টিপাররা যোগাযোগ রেখেছিল বলেই মনে করছে পুলিশ। শ্যামের নির্দেশেই টিপাররা স্বর্ণবিপণিতে রেকি করতে যায়। ক্রেতা হয়ে, তারা দোকানের কোথায় কী রয়েছে দেখে নেয়। দুটি দোকানের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে, পলাতক টিপারদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
দেখুন ঘটনার রুদ্ধশ্বাস ভিডিও
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, ঘটনার প্রায় ৪০ দিন আগে কল্যাণীতে অস্থায়ী ঠিকানা তৈরি করেছিল দুষ্কৃতীরা। বি ব্লকের নিমতলা এলাকায় কোনও রকম পরিচয়পত্র ছাড়াই ঘর ভাড়া নিয়েছিল গ্যাংয়ের দুই দুষ্কৃতী কুন্দন ও রাজু। ভাড়া ছিল ১৬০০ ও ১২০০ টাকা। রেলের সাফাইকর্মী হিসেবে নিজেদের পরিচয় দিয়েছিল দু’জন। ওই বাড়ির মালিক কাঁচরাপাড়ার গোপাল সাউকে আটক করা হয়েছে বুধবার। চলে জিজ্ঞাসাবাদ। জানা গিয়েছে, ওই বাড়িওয়ালার শ্বশুরবাড়ি বিহারের ছাপড়ায়। যেখানে অভিযুক্ত রিক্কি থাকে। গোপালবাবুর স্ত্রী সুশীলা সাউ জানান গত ৩০ বছর ধরে তাঁরা বাড়ি ভাড়া দিচ্ছেন। কেন পরিচয়পত্র ছাড়া তাঁর স্বামী ঘর ভাড়া দিয়েছিল, তা জানেন না বলেই জানাচ্ছেন সুশীলা। ধৃতদের জেরা করতে বুধবার রানাঘাট গিয়েছেন কলকাতা পুলিশের ডাকাতি দমন শাখার চার আধিকারিক।
অন্যদিকে, পুরুলিয়ার ডাকাতির ঘটনায় এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তদন্তকারীরা জেনেছেন, ডাকাতির দুই দিন আগে ৫ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে সোনার দুল বুকিং করেছিল দুষ্কৃতীরা। মঙ্গলবার বাকি টাকা দিয়ে গয়না নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল। তখনই ওই দুষ্কৃতীসহ আরও পাঁচজন ভিতরে চলে আসে এবং অপরাধ ঘটায়। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার বলেন, ঘটনাস্থল থেকে একটু দূরে একটি বাইক উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, দুষ্কৃতীরা ঝাড়খণ্ডে পালিয়েছে।