রোগী দেখার সংখ্যা বেঁধে দিয়ে সরকারি ডাক্তারদের কী নির্দেশ দিল স্বাস্থ্যদপ্তর?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: হাসপাতালের রেফার এবং চিকিৎসার খরচ কমাতে তদুপরি মানুষকে উন্নত চিকিৎসা দিতে তৎপর স্বাস্থ্যভবন। কিন্তু অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছেন চিকিৎসকরা। স্বাস্থ্যদপ্তরের অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট বলছে, একজন চিকিৎসক হাসপাতালের আউটডোরে প্রত্যাশার তুলনায় কম রোগী দেখছেন। সার্জেনরা যথেষ্ট কম অপারেশন করছেন। স্বাস্থ্যদপ্তরের নির্দেশ, একজন চিকিৎসককে মাসে আউটডোরে অন্তত ১,৯৫০ জন রোগী দেখতে হবে। সার্জেনকে সপ্তাহে অন্তত সাতটি বড় অপারেশন করতে হবে। সরকারি হাসপাতালের একজন চিকিৎসকের এমন পারফরম্যান্সকে সন্তোষজনক মনে করছে না স্বাস্থ্যদপ্তর। স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রধান সচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম জানিয়েছেন, পরিষেবার মান উন্নত করতে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্যদপ্তর তরফে জানা গিয়েছে, ৩১ আগস্ট সমস্ত জেলাশাসক, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ও মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষকে চিঠি দিয়ে এই কথা জানিয়েছেন রাজ্যের স্বাস্থ্যদপ্তরের প্রধান সচিব। আরও বলা হয়েছে, প্রত্যাশিত সংখ্যক রোগী দেখার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা করতে হবে। অন্যথায় প্রশাসনিক পদক্ষেপ করতে হবে। ২৩ এপ্রিল-২৩ জুন পর্যন্ত তিন মাসে, রাজ্যের বিভিন্ন স্তরের হাসপাতালে রোগী দেখা ও অপারেশনের পরিসংখ্যান দেওয়া হয়েছে ওই চিঠির সঙ্গে। বলা হয়েছে, রাজ্যের ১৯টি মেডিক্যাল কলেজ, ১১টি জেলা হাসপাতাল, ৩১টি মহকুমা হাসপাতাল, ২৩টি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল এবং ১১টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অপারেশনের সংখ্যা অত্যন্ত হতাশাজনক। ২০টি মেডিক্যাল কলেজ, ১৪টি জেলা হাসপাতাল, ৩৪টি মহকুমা হাসপাতাল, ২৪টি স্টেট জেনারেল হাসপাতাল ও ১১টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ওপিডিতে রোগী দেখার সংখ্যাও অনেক কম।
নির্দেশ আসার পর চিকিৎসক মহলে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন অব হেলথ সার্ভিসের রাজ্য সম্পাদক মানস গুমটার কথায়, নির্দেশের কোনও বাস্তবতা নেই, সংখ্যাতত্ত্ব দিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা বিচার করা যায় না। অপারেশন শেষ হতে কখনও কখনও আট ঘন্টাও লেগে যায়। আউটডোরে কোনও চিকিৎসক রোগী ফেরান না। ওয়েস্ট বেঙ্গল ডক্টরস ফোরামের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা কৌশিক চাকীর মতে, এই নির্দেশ ভিত্তিহীন।