বাংলার দুগ্গা পুজো: আজও অমলিন ২২৩ বছরের প্রাচীন মালদহের রায়বাড়ির পুজো
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: মালদহের রায়বাড়ির পুজো মানেই যেন জীবন্ত ইতিহাস। এই বাড়িতে দেবী দুর্গার সঙ্গে অস্ত্রেরও পুজো করা হয় কিন্তু কোনও বলি দেওয়ার রীতি নেই। ২২৩ বছরের পুরনো এই পুজো আজও অমলিন। তিলাসনে অবস্থিত এই রায় জমিদারবাড়ি। এই পুজোর শুরু হয় শূন্যে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে।
এই বাড়িতে রথের দিন কাঠামো পুজো হয়। তারপরেই শুরু হয় দেবী প্রতিমা তৈরির কাজ। সপ্তমীর দিন নাপিত গঙ্গাজল ছিটিয়ে রাস্তা শুদ্ধ করে এই পরিবারের সদস্য এবং চারজন ব্রাহ্মণকে নিয়ে যান। নদী থেকে জল ভরে বাড়ি আসার পথে পাঁচ রাউন্ড গুলি ছুঁড়ে সূচনা হয় পুজোর। আড়ম্বর নয়, এই পরিবারের সদস্যরা প্রাচীন রীতি নীতি মেনে নিষ্ঠার সাথে পুজো করে আসছেন। এখনও এই পুজোর আমন্ত্রণ পত্র বাংলা ও ইংরেজিতে ছাপা হয়। আজও আমন্ত্রণপত্র দিয়ে সকলকে নিমন্ত্রণ করা হয়।
জানা যায়, ডাল ব্যবসা করার জন্য উত্তরপ্রদেশ থেকে অবোধ নারায়ন রায় এসেছিলেন বাংলায়। তিনি সিঙ্গাবাদ স্টেশনে ডাল নিয়ে ব্যবসা করতেন। আগে এখানে বিশাল জঙ্গল ছিল। প্রায়ই শিকার করতে যেতেন এই বাড়ির সদস্যরা। তিনি বিপ্লবীদের পরামর্শে শুরু করেন দুর্গা পুজোর। সেই ৩ বিপ্লবী ছিলেন সন্ন্যাসী বিদ্রোহের ৩ সদস্য। এই বিপ্লবীরা মালদহের জঙ্গলে এসে লুকিয়ে ছিলেন।
মৈথিলী ব্রাহ্মণরা পুজোর সময়ে এই বাড়িতে আসেন ভোগ রান্না করতে। দশমীর দিন পুনর্ভবা নদীতেই প্রতিমা বিসর্জন করা হয়। অষ্টম এডওয়ার্ড এসেছিলেন এই বাড়িতে।
সময়টা বদলে গেলেও আজও সীমান্তবর্তী জমিদার বাড়ির পুজোর জৌলুস কমেনি। রয়ে গেছে প্রাচীন ঐতিহ্য। রয়ে গেছে নানান গল্প। এখনও এই পুজো উপলক্ষে ৪দিন ধরে স্থানীয়দের ভোজনের ব্যবস্থা করা হয়। জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে এই পুজোতে অংশগ্রহণ করেন অগণিত মানুষ।
পথ নির্দেশ: