রেকর্ড সংখ্যক আত্মহত্যা ২০২২শে, কী বলছেন মনোবিদরা?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ন্যাশনাল ক্রাইম রেকর্ডস ব্যুরোর (এনসিআরবি) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২২ সালে দেশজুড়ে এক লক্ষ ৬৪ হাজার ৩৩ জন মানুষ আত্মহত্যা করেছেন। এনসিআরবি ১৯৬৭ সাল থেকে দেশে আত্মহত্যার পরিসংখ্যান নথিবদ্ধ করছে। তাদের তথ্য বলছে, ২০২২শে রেকর্ড সংখ্যক মানুষ আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। যা বিগত ৫৬ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। ২০২১ সালের তুলনায় গত বছরে আত্মহত্যার সংখ্যার বৃদ্ধির হার ৭.২% বেশি। এহেন পরিসংখ্যান যথেষ্ট উদ্বেগজনক, এমনটাই মত মনোবিদদের।
বিশ্ব আত্মহত্যা প্রতিরোধ দিবসে সচেতনতা প্রচারের একটি অনুষ্ঠানে রবিবার এনসিআরবির তথ্য সামনে এসেছে। আত্মহত্যা প্রতিরোধে কলকাতা পুলিশের সঙ্গে যুক্ত একটি সংগঠন অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল। সুইসাইড সচেতনতায় সংশ্লিষ্ট সংগঠনটির সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে কলকাতা পুলিশ। বিখ্যাত মনোবিদ ডঃ জয়রঞ্জন রাম, প্রণাম সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক ঈশা দত্ত, অবসরপ্রাপ্ত আইপিএস অফিসার জয়ন্ত চৌধুরী, শিক্ষিকা মিত্রা সিনহা রায় প্রমুখরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। এদিনের অনুষ্ঠানে একাধিক আত্মঘাতী পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তৈরি একটি ফোরাম পথ চলা শুরু করেছে। জানানো হয়েছে, দেশের পাঁচ আত্মহত্যা প্রবণ রাজ্যের মধ্যে রয়েছে বাংলা। তালিকায় রয়েছে মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, মধ্যপ্রদেশ ও কর্ণাটক। এনসিআরবির বলছে, দেশের মোট আত্মহত্যার অর্ধেকই হয় পাঁচ রাজ্যে। মনোবিদ ড জয়রঞ্জন রাম বলেন, ১৮ থেকে ৩০ বছর বয়সিদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা প্রায় ৭০ শতাংশ। এর কারণ বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, পরিবার ও সম্পর্কজনিত বিবাদে তাঁরা নিজের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন।
ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে সম্প্রতি আত্মহত্যার প্রবণতা মারাত্মকভাবে বেড়ে গিয়েছে। একজন করে পড়ুয়া আত্মঘাতী হন। তাঁদের মধ্যে ৩২ শতাংশ পরিবারিক সমস্যার শিকার। কলকাতা পুলিশের তথ্য বলছে, গত একমাসে চার ছাত্রছাত্রী আত্মহননের পথ বেছে নিয়েছেন। আত্মহত্যা রুখতে পুলিশ ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন বিশেষ টোল ফ্রি নম্বর (৯০৮৮০৩০৩০৩) চালু করেছে। কেউ অবসাদে ভুগলে ওই নম্বরে ফোন করতে পারবেন। সংগঠনটি জানিয়েছে, ২০২২ সালে এমন ফোন এসেছিল ছ’হাজার ১২৫টি। চলতি বছরের প্রথম ছ-মাসেই ফোনের সংখ্যা চার হাজার পেরিয়েছে।