INDIA জোটের আতঙ্কে ইডি, সিবিআই দিয়ে বিরোধী নেতাদের গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা করছে কেন্দ্র?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: কেন্দ্রে নরেন্দ্র মোদী সরকারের বিভিন্ন নীতির বিরোধীতা করে জোট বাধতে শুরু করেছে বিরোধী দলগুলি। নিজেদের স্থানীয় রাজনীতির বাধ্যবাদকতাকে দূরে সরিয়ে আগামী লোকসভা নির্বাচনের আগে ক্রমশই সঙ্গবদ্ধ হচ্ছে তারা। জোটের নাম হয়েছে INDIA। ক্রমশই মানুষের মনে জোরালো হচ্ছে জোটের আওয়াজ। তাতেই বিপদের আঁচ পাচ্ছে বিজেপি। ফলে এই জোটকে কি ভাবে ভাঙা যায় তার কৌশল তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ইতিমধ্যেই ‘ইন্ডিয়া’-আতঙ্কে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী পাল্টা ‘মিশন ভারত’ শুরু করে দিয়েছেন! যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক শুরু হয়ে গিয়েছে।
কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বহু চর্চিত তাতেদের ‘মোক্ষম হাতিয়ার’ কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করতে চাইছে ইন্ডিয়া জোটকে ছত্রভঙ্গ করার জন্য। সূত্রের খবর, দীর্ঘদিন ধরে তদন্তপর্ব চলছে কিংবা চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে, এরকম দুর্নীতি মামলায় অভিযুক্ত বিরোধী নেতানেত্রীদের টার্গেট করছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি), সিবিআই এবং আয়কর দপ্তর। চলতি সেপ্টেম্বর মাস থেকেই শুরু হতে পারে গ্রেপ্তারি পর্ব। কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের অন্দরে অন্তত তেমনই জল্পনা চরমে। এমনকী গ্রেপ্তারির তালিকায় বিরোধীশাসিত কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর নাম থাকাও অসম্ভব নয় বলে শোনা যাচ্ছে। সে তিনি ঝাড়খণ্ডের হেমন্ত সোরেন বা ছত্তিশগড়ের ভূপেশ বাঘেল হতে পারেন। দুই মুখ্যমন্ত্রীই কয়লা এবং খনি লিজ সংক্রান্ত দুর্নীতি মামলায় বিদ্ধ। সম্প্রতি দিল্লি এসে কংগ্রেসের বাঘেল বলে গিয়েছেন, ‘সাহস থাকলে আমাকে গ্রেপ্তার করুক মোদি সরকার।’ আবার ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চা সুপ্রিমো হেমন্তের সচিবালয় এবং বাসভবনে একাধিকবার চলেছে তল্লাশি এবং জিজ্ঞাসাবাদ। দু’জনেরই ঘনিষ্ঠ আধিকারিকদের ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে কেন্দ্রীয় এজেন্সি। তাই স্বাভাবিকভাবে তাঁদের গ্রেপ্তারি নিয়ে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে কান পাতলেই।
ইডি-সিবিআইয়ের টার্গেটে আছে আরও নাম। তাঁদের মধ্যে অন্যতম তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এবং বিহারের উপ মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব। বেছে বেছে ইন্ডিয়া জোটের বিশেষ কমিটির বৈঠকের দিনেই অর্থাৎ, আগামী কাল অভিষেককে ডেকে পাঠিয়েছে ইডি। তেজস্বী যাদবের নাম জমির বিনিময়ে রেলে চাকরি দুর্নীতি মামলায় চার্জশিটে অন্তর্ভুক্ত করেছে সিবিআই। যে কোনও সময় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হতে পারে বলে আশঙ্কায় আরজেডি শিবিরে। আবার যে আবগারি দুর্নীতির অভিযোগে ধৃত দিল্লির উপ মুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিশোদিয়া, সেই একই মামলায় তেলেঙ্গানার বিআরএস সরকারের মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের কন্যা কে কবিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তামিলনাড়ুতে এক মন্ত্রী ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন।
এই জল্পনা আরও উসকে দিচ্ছে অন্ধ্রপ্রদেশে চন্দ্রবাবু নাইডুর গ্রপ্তারির ঘটনা। কারণ, মোদী সরকারকে না জানিয়ে এত বড় পদক্ষেপ নেবেন জগন্মোহন, এটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করছেন না অনেকেই। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, চন্দ্রবাবুর এনডিএতে যোগ দেওয়া নিয়ে জোর জল্পনা চলছে। তা সত্ত্বেও কয়েকমাস ধরে টালবাহানা করছেন তিনি। তাই কি পরোক্ষে তাঁকে শিক্ষা দিল বিজেপি? মনে করা হচ্ছে, এনডিএতে না এলে যে কোনও দলই টার্গেট হতে পারে এই বার্তা দিতে চাইছে বিজেপি।