কবিরাজি ঝোল খেয়েছেন? জানেন কোথায় মিলবে সে’খাবার?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বাঙালি ফ্রাই হিসেবে কবিরাজি খেতেই অভ্যস্ত। কিন্তু বাঙালির পাকশালা মানেই এক গবেষণাগার, সেখানে তৈরি হয়েছে কবিরাজি ঝোল। একেবারে লঘুপাক খানা। কাঁচকলা-পেঁপে-জিরে-মরিচ দিয়ে বানানো পাতলা ঝোল, রোগীর পথ্যির সামিল। ফ্যাকাসে রং, তার মধ্যে আবার মাছ আর অন্যান্য সবজি ভাসে। এ ঝোল নাকি পেট ঠান্ডা রাখে। খেলে নাকি পিত্ত ও অম্লনাশ হয়। হাইকোর্ট চত্বরে রয়েছে উকিলবাবুর হোটেল, সেখানেই মেলে কবিরাজি ঝোল। খাবারটি পেটের রোগে কাজ দেয়।
উকিলবাবুর হোটেলের বয়স প্রায় একশো চল্লিশ বছর। একদা দোকানটির নাম ছিল হেস্টিংস রেস্টুরেন্ট অ্যান্ড ইটিং হাউজ। তখন থেকেই এরা কবিরাজি ঝোল রাঁধছেন। উকিল-ব্যারিস্টাররা এখানে নিয়মিত খেতে আসেন। শোনা যায় এককালে বিচারকের দুপুরের খাবার এখান থেকেই যেত।
১৮৮৫ সালে কলকাতা আদালতের রাস্তাটির নাম ছিল হেস্টিংস রোড, এখন যার নাম কিরণ শঙ্কর রায় রোড হয়েছে। সেই সময় হেস্টিংস নাম দিয়ে দোকান খোলা হয়, ঘরের মতো কম তেল-মশলার রান্না মানুষকে খাওয়ানোই ছিল এদের ইউএসপি। এখন দোকানের মালিক শৈলেন্দ্রুকুমার রক্ষিত। কোর্টের উকিলবাবুরাই নাকি উকিলবাবুর হোটেলে যাওয়ার সুপারিশ করতেন। এভাবে মুখে মুখে হেস্টিংস নাম বদলে হয়ে গেল, উকিলবাবুর হোটেল।
হোটেলটি বহু মালিকানা বদলের সাক্ষী, ১৯৪২ সালে শৈলেন্দ্রুবাবুর বাবা হোটেলটির দায়িত্ব নেন। তিনি নিজেও ওকালতি করেন। তাঁর বাবা সুকুমার রক্ষিত ছিলেন মুহুরি। হোটেলের পূর্বতন মালিককে আর্থিক সাহায্য করেছিলেন সুকুমার রক্ষিত কিন্তু টাকা শোধ না করায়, হোটেলের মালিকানা তাঁদের হাতে আসে। দোকানের সিগনেচার ডিস কবিরাজি ঝোল। উকিলবাবুর হোটেল পুরোদস্তুর পাইস হোটেল। এখনও সেখানে আধুনিকতা প্রবেশ করেনি। কাঠের বেঞ্চ-টেবিলে বসে ঘরোয়া রান্না খাওয়াই এখানকার মূল আকর্ষণ।