ভোকাট্টা! আশা ও আশঙ্কা নিয়ে বিশ্বকর্মা পুজোর অপেক্ষায় ঘুড়ির কারিগররা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ভোকাট্টা! দু’দিন পরেই বিশ্বকর্মা পুজোয় কলকাতার আকাশ জুড়ে তো বটেই, গোটা রাজ্যের আকাশ-বাতাস মুখরিত হবে সকাল থেকে বিকেল। বিশ্বকর্মা পুজো মানেই সে দিনটা জুড়ে ঘুড়ি ওড়ানোর উৎসব বাংলায়।
তাই এখন দম ফেলার ফুসরত নেই ঘুরির কারিগরদের। বিশ্বকর্মা পুজোর আকাশে উড়বে টম অ্যান্ড জেরি, ছোটা ভীম, মোটু পাতলু, স্পাইডারম্যান, স্কাই ডান্স সহ নানা ডিজাইনের রং বেরঙের কার্টুন ঘুড়ি। সেই সঙ্গে উড়বে কাগজের ময়ূরপঙ্খী, হরহরিয়া, চাঁদিয়াল, পেটকাটি, সতেরো ইঞ্চি, ছক্কা।
কলকাতার মেটিয়াবুরুজ, খড়দহ থেকে ঘুড়ি তৈরির রিম, কাঠি, আঠা ইত্যাদি উপকরণ কিনে এনে ঘুড়ি তৈরি করছেন বিভিন্ন জেলার কারিগররা। ঘুড়ির সঙ্গে লাটাই এবং সুতোও বিক্রি হয়। বর্তমান সময়ে সাড়ে ২৭ ইঞ্চি সাইজের ঘুড়ির চাহিদা খুব বেশি। এক রিম কাগজ কিনতে খরচ পড়ে আটশো থেকে হাজার টাকা। তাতে আটশো পিস ঘুড়ি তৈরি হয়। আর প্লাস্টিকের এক রিম কাগজের দাম পড়ে সাড়ে আটশো টাকা। বিভিন্ন সাইজের ঘুড়ির কাঠি ইঞ্চি হিসেবে এক এক রকম দাম।
আবার আরেকটি দিকও আছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেল কদর কমেছে পেটকাটি, চাঁদিয়ালাদের। এক ঘুড়ি-শিল্পী ও বিক্রেতার কথায়, ‘‘কয়েক বছর আগেও বিশ্বকর্মা পুজোর আগে থেকেই কত ঘুড়ি, লাটাই, সুতোর বেচা-কেনা হত। এখন প্রায় কেউ আর ঘুড়ি ওড়ায় না, কেনেও না। সবাই মোবাইলে গেম নিয়ে ব্যস্ত।’ কাগজের ঘুড়ি বাজারে পাওয়া যাচ্ছে কম। প্রায় সব ঘুড়ি প্লাস্টিকের। পাঁচ টাকা থেকে ঘুড়ির দাম শুরু হচ্ছে৷ ভাল ঘুড়ির দর ১০-১৫ টাকা।
অনেকেই আক্ষেপের সঙ্গে বলছেন, বিশ্বকর্মা মানে আকাশ জুড়ে ঘুড়ির লড়াই। হাতে লাটাই নিয়ে সকাল থেকেই ‘ভো-কাট্টা’র খেলায় মেতে ওঠা। কিংবা কঞ্চির লাঠি, গাছের ডাল নিয়ে কাটা ঘুড়িটির পিছনে ছোটা। ধরতেই হবে। এখন সে ছবি কি আর দেখা যায়? ছায়াছবির ভাষায়, সে সব এখন ‘ফ্ল্যাশ ব্যাক’!