সবাইকে বিমার আওতায় আনার স্বপ্ন দেখাচ্ছে মোদী, কিন্তু সমীক্ষা বলছে উল্টো কথা
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: বিমা নিয়ে দেশ কতটা প্রস্তুত, তা জানতে একযোগে একটি সমীক্ষা চালিয়েছিল জীবনবিমা সংস্থা এসবিআই লাইফ এবং শিল্প উপদেষ্টা সংস্থা ডেলয়েট। গত পাঁচ বছরে জীবনবিমা ছেড়েই দিয়েছেন ৪৭ শতাংশ মানুষ। কেউ পলিসি সারেন্ডার করেছেন, কেউ আবার জমানো টাকা মাঝপথেই তুলে নিয়েছেন, কিংবা প্রিমিয়ামের টাকা বাকি পড়ে যাওয়ায়, তা আর এগিয়ে নিয়ে যাননি। করোনা মহামারী, মূল্যবৃদ্ধির কোপ, সঙ্গে দোসর জিএসটি—এই ত্র্যহস্পর্শই এমন পরিস্থিতির আসল কারণ। একথা একবাক্যে স্বীকার করেছেন ওই সব গ্রাহকরা। তাঁদের বক্তব্য, মূল্যবৃদ্ধির জ্বালায় যেখানে ডাল-ভাত জোটানোই দায়, সেখানে মোটা টাকা প্রিমিয়াম দিয়ে বিমা পলিসি টেনে নিয়ে যাওয়া বিলাসিতা। মৃত্যুকালীন ক্ষতিপূরণ বাবদ পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয় বিমা প্রকল্প। কিন্তু এখন যা পরিস্থিতি তাতে মৃত্যুর পর পরিবারের কী হবে, সেব্যাপারে চিন্তা করতে রাজি নন অনেকেই। অথচ দেশের সব মানুষকে বিমার আওতায় আনার স্বপ্ন দেখাচ্ছে নরেন্দ্র মোদী সরকার।
সমীক্ষার মূল প্রশ্ন ছিল, আর্থিকভাবে কোন বিষয়টি ভাবাচ্ছে সাধারণ মানুষকে? সমীক্ষার জন্য ৪১টি শহরে পাঁচ হাজার মানুষকে বেছে নেওয়া হয়। উত্তরে ৪৩ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, মূল্যবৃদ্ধি নিয়েই তাঁরা সবচেয়ে বেশি নাজেহাল। ৩৬ শতাংশের দুশ্চিন্তার কারণ, চিকিৎসা খরচ। সন্তানের শিক্ষাখাতে খরচ সামাল দেওয়া যাচ্ছে না, এমন মতামত এসেছে ৩৫ শতাংশের ক্ষেত্রে। সমীক্ষায় বিমা গ্রাহকদের অন্তত ৬৮ শতাংশ দাবি করেছেন, যা আছে, সেটাই যথেষ্ট। এর থেকে বেশি বিমা করা সম্ভব নয়। অথচ বাস্তব বলছে, ৯৪ শতাংশ মানুষ যেটুকু বিমা করিয়েছেন, তা প্রয়োজনের তুলনায় নিতান্তই কম। আবার বহু বাণিজ্যিক সংস্থা আছে, যারা কর্মীদের জন্য বিমা পলিসি করায়। সেরকম চাকরি করা ৬৮ শতাংশ সমীক্ষায় দাবি করেছেন, ওটাই যথেষ্ট। নতুন বিমার দরকার নেই। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ৯৬ শতাংশ মানুষের ক্ষেত্রে তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য।
আবার শুধু যে ৪৭ শতাংশ মানুষ চালু প্রকল্প বন্ধ করেছেন, তা নয়। সমীক্ষাটি জানাচ্ছে, বিমা বন্ধের প্রবণতা রয়েছে ৫০ শতাংশের। কিন্তু কেন? উত্তরে মাত্র ২০ শতাংশ বলেছেন, জীবনবিমার চেয়ে অন্য কোনও সঞ্চয় প্রকল্পে বিনিয়োগ করা ভালো।