পুজো স্পেশাল বিভাগে ফিরে যান

বাংলার দুগ্গা পুজো: শতাব্দী প্রাচীন শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোর ইতিহাস

September 21, 2023 | 2 min read

নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: উত্তর কলকাতার বনেদি বাড়ির পুজোর মধ্যে অন্যতম শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। ১৭৫৭ সালে রাজা নবকৃষ্ণ দেবের হাত ধরেই সূচনা হয় এই পুজো। এ বছর ২৬৭ তম বছরে পা দিল। ১৭৫৭ সালে রাজা নবকৃষ্ণ দেব যখন রবার্ট ক্লাইভ ও ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অন্যান্য অফিসারদের সম্মানিত করেছিলেন, তখন থেকে চর্চিত হয়ে আসছে রাজবাড়ির এই পুজো।

অন্য মতে জানা যায়, পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের পরাজয়ের পড়ে হিন্দুদের বিজয়োল্লাস পালন করতে মহারাজা নবকৃষ্ণ দেব এই পুজো শুরু করেন। আর সেই বছরই শুরু হয়েছিল কৃষ্ণনগর রাজবাড়ির পুজোও । তবে নবকৃষ্ণ দেবের থাকাকালীন শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো দুই ভাগে হয়ে বড় তরফ ও ছোট তরফের পুজো হয়। রাজ পরিবারের সূত্রের খবর, বড় তরফের পুজো ১৭৫৭ সালে শুরু হয় এবং ছোট তরফের পুজো শুরু হয়েছিল ১৭৯০ সালে।

পৌরাণিক ও বেদ মতে এখানে পূজিত হন মা দুর্গা। আজও ঐতিহ্যের সঙ্গেই চলে আসছে এই দুর্গাপুজো উদযাপন। এ বাড়িতে দেবী দুর্গা কন্যারূপে পুজিত হন। তাই মাতৃমূর্তির সামনে ঝোলানো থাকে চিক। এক সময়ে দশমীতে নীলকণ্ঠ পাখি ওড়ানোর হত বলে জানা গিয়েছে।

শোভাবাজার রাজবাড়ির মাতৃমূর্তিয়একই ছাঁচে তৈরি হয়। মা দুর্গা রাজবাড়িতে বৈষ্ণবী হিসেবে পূজিতা হন। তাই শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজোয় অন্নভোগ থাকে না। গোটা ফল, গোটা আনাজ, শুকনো চাল, কচুরি, খাজা, গজা, মতিচুর-সহ নানা ধরনের মিষ্টি দেবীকে নিবেদন করা হয়। আজ‌ও নিয়ম মেনে রথের দিন কাঠামো পুজো হয় বড় তরফের পুজোয়। আর উল্টোরথের দিন হয় ছোট তরফের কাঠামোপুজো।

কথিত রয়েছে, একসময় শ্রীরামকৃষ্ণ এই বাড়িতে ৯০ দিন পুরোহিত হিসেবে কাজ করেছিলেন৷ একবার পুজোর সময় তিনি ছড়রা গাড়িতে চেপে শোভাবাজার রাজবাড়িতে হাজির হয়েছিলেন৷ আর এসেই তিনি মায়ের সামনে ষাষ্ঠাঙ্গে প্রণাম করেছিলেন ৷

এই রাজবাড়িতে নবমীর আগের পক্ষের কৃষ্ণানবমীতে বোধন হয়, ঠাকুর দালানে বেদি করে দেবীর ঘট স্থাপন করা হয়৷ এইদিন থেকেই পুরোহিতরা বাড়ির ঠাকুর দালানে পুজোর দিন পর্যন্ত চণ্ডীপাঠ, বেদ, রামায়ণ ও মধুসূদন পাঠ করেন ৷

ষষ্ঠীর সন্ধ্যায় বিল্ব বরণ, আমন্ত্রণ, অধিবাস হয় ৷ প্রতিমার সামনে ঘট স্থাপন ও প্রাণ প্রতিষ্ঠা করা হয়৷ দেবী দুর্গাকে সোনার নথ ও সিঁদুর পরানো হয়৷ সপ্তমীর ভোরে রাজবাড়ির নিজস্ব ঘাটে কলা বউকে /নবপত্রিকা স্নান করানো হয়৷

অষ্টমী ও নবমীর সন্ধিক্ষণে ১০৮টি প্রদীপ জ্বেলে সন্ধিপুজো করা হয়৷ সন্ধিপুজোর সূচনা ও সমাপ্তি ঘোষণার জন্য আগে কামানের শব্দ করা হত৷ তবে বর্তমানে বন্দুকের শব্দেই সূচনা হয় সন্ধিপুজোর৷

এই রাজ বাড়ির রীতি অনুযায়ী দশমীর দিন সকালেই প্রতিমা নিরঞ্জন হয়৷ প্রতিমার সামনে একটি বড় হাঁড়িতে জল ভর্তি থাকে৷ ওই জলের ভিতর মায়ের পায়ের প্রতিবিম্ব দেখে বাড়ির সবাই প্রণাম করেন৷

পথ নির্দেশ:

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#durga puja, #Shobhabazar Rajbari, #Durga Puja 2023

আরো দেখুন