বাংলার দুগ্গা পুজো: জেনে নিন ঐতিহ্যবাহী মহিষাদল রাজবাড়ির পুজোর ইতিহাস
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: পায়ের তলায় সরষে রাখা বাঙালি যেন মুক্ত বিহঙ্গ। শহুরে পুজোর ভিড় একটু নিরিবিলি সময় কাটাতেই পছন্দ করেন অনেকে। পুজোর আবহে “চল মন বেড়াতে যাই”। তল্পিতল্পা গুছিয়ে পুরাতন ঐতিহ্যের টানে বেরিয়ে পড়তে চান অনেক বাঙালি। আপনি যদি সেই দলেই পড়েন তাহলে এবারের পুজোয় ঘুরে আসতে পারেন মহিষাদল রাজবাড়ি।
মুঘল আমলে আকবরের সেনাবাহিনীতে উচ্চপদে আসীন ছিলেন জনার্দন উপাধ্যায়। তিনি উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। ব্রাহ্মণ ব্যবসায়ী। আর সেই কাজেই নদীপথে এসেছিলেন মহিষাদলের কাছে গেঁওখালিতে। নদীমাতৃক বাংলার শোভায় মুগ্ধ হয়ে এখানে বসবাসেরর করার সিদ্ধান্ত নেন। সেইসময়ে রাজা কল্যাণ রায়ের থেকে কিনে নেন মহিষাদলের রাজত্ব।
পরবর্তীকালে বংশ পরম্পরায় রাজবাড়ির আয়তন আরও বৃদ্ধি পেতে থাকে। ৩ টি প্রাসাদ নিয়ে তৈরি এই রাজবাড়ি। প্রথম প্রাসাদের নাম রঙ্গিবসনা। দ্বিতীয়টির নাম লালকুঠি এবং তৃতীয়টির নাম ফুলবাগ। তবে কেবল মাত্র ফুলবাগেই পর্যটকরা থাকতে দেওয়া হয়। প্রায় আড়াইশো বছরের প্রাচীন মহিষাদল রাজবাড়ির দুর্গাপুজো। রাজা আনন্দলাল উপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর আনুমানিক ১৭৭৮ সালে রানি জানকী দেবী প্রচলন করেন এই পুজোর। রাজবাড়ির পুজো হয় রঙ্গিবসনার দুর্গামন্দিরে।
ডাকের সাবেকি সজ্জিত মা দুর্গা। দেবী বিগ্রহ তৈরির কাজ শুরু হয় রথের পরের দিন থেকেই। বৈষ্ণব মতে এখানে পুজো করা হয়। মহালয়ার পরেরদিন রাজবাড়ির কূলদেবতা মদন গোপাল জিওর মন্দির থেকে ঘটোত্তলনের মাধ্যমে পুজোর শুরু হয়। আগে এই রাজবাড়িতে সন্ধিপুজোতে কামানদাগা হত। দশমিতে রূপনারায়ন নদীর ধারে বের হতো শোভাযাত্রা। রাজবাড়ির লাগোয়া দিঘীতে দেওয়া হয় বিসর্জন। তবে এখনও রাজ পরিবারের সদস্যরা পুজোয় ঘরমুখী হন সঙ্গে স্থানীয়রাও এই পুজোয় যোগ দেন। সব মিলিয়ে বেশ আনন্দময় পরিবেশের সৃষ্টি হয় এই রাজবাড়ির পুজোয়।
পথ নির্দেশ: