নয়া প্রতারণার পর্দা ফাঁস! ‘বায়োমেট্রিক ফ্রড’ নিয়ে কোন পথে তদন্ত?
নিউজ ডেস্ক, দৃষ্টিভঙ্গি: ঘুম উড়েছে পুলিশের! আঙুলের ছাপ ক্লোন করে প্রতারণার ঘটনা নিয়ে উদ্বিঘ্ন লালবাজার। নয়া সাইবার প্রতারণার পর্দা ফাঁস করল লালবাজার। আধার কার্ডের বায়োমেট্রিক তথ্য হাতিয়ে প্রতারণার অভিযোগে এই প্রথম কাউকে গ্রেপ্তার করল গোয়েন্দা বিভাগ। ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখা বুধবার সকালে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর থেকে দু’জনকে পাকড়াও করেছে। ধৃতদের নাম মোক্তার আলম ও রোশন আলি। ধৃতরা যথাক্রমে উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর এবং চোপড়ার বাসিন্দা। ৭ অক্টোবর পর্যন্ত তাদের পুলিশি হেফাজতের পাঠাবার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
বাগুরহাটির তুষারকান্তি মুখোপাধ্যায় গত মাসে লালবাজারের সাইবার শাখায় ২৯ হাজার টাকা প্রতারণার অভিযোগ জানান। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, আধার এনেবেল্ড পেমেন্ট সিস্টেমের মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে নিয়েছে প্রতারকরা। ওই টাকা যে অ্যাকাউন্টে গিয়েছে, তার লোকেশন খতিয়ে দেখেন তদন্তকারীরা। উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুর এবং বিহারের আরারিয়ার হদিশ পান তদন্তকারীরা। বায়োমেট্রিক তথ্য ব্যবহার করে জালিয়াতির ঘটনাগুলিও একই জায়গা থেকে ঘটেছে। আরারিয়ার একটি প্রত্যন্ত গ্রামে তিন মূল অভিযুক্ত এই কারবার চালাচ্ছে বলে খবর পায় পুলিশ। সেই খবরের ভিত্তিতে মঙ্গলবার সেখানে হানা দেন তদন্তকারীরা। সেখানে গিয়ে পুলিশ জানতে পারে এক অভিযুক্তকে হরিয়ানা পুলিশ একই অভিযোগে গ্রেপ্তার করেছে। তারপরই বাকি দু’জন এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে।
গন্তব্য বদলে ইসলামপুরে অভিযান চালান ব্যাঙ্ক জালিয়াতি দমন শাখার অফিসাররা। সেখান থেকেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেন তদন্তকারীরা। ধৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ জানতে পেরেছে, কলকাতা পুলিশ এলাকার আরও পাঁচ ঘটনায় অভিযুক্ত এরা, মোট প্রতারণার পরিমাণ এক লক্ষ টাকা। যার একটি ক্ষেত্রেই প্রতারণার পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা। প্রাথমিকভাবে মোক্তার ও রোশনকে জেরা করে তদন্তকারীরা জেনেছেন, তারা কোনওভাবে অভিযোগকারীর আঙুলের ছাপ হাতিয়ে তা দেখিয়ে নিজেদের ওই ব্যাঙ্কের গ্রাহক হিসেবে দাবি করেছিল। কৌশলে অভিযোগকারীর অ্যাকাউন্টের সঙ্গে নথিভুক্ত আধার কার্ডের নম্বর জোগাড় করে, তা থেকে আঙুলের ছাপ নকল করত তারা। ধৃতরা বিভিন্ন পাবলিক ডোমেইন ও ওয়েবসাইট থেকে বায়োমেট্রিক লকের মতো নানারকম ইলেকট্রনিক ডেটা সংগ্রহ করত। লালবাজার জানিয়েছে, প্রতারণা চক্রের সঙ্গে বিহারের আরারিয়া এলাকা থেকে পলাতকদের প্রত্যক্ষ যোগ রয়েছে। পলাতকদের সন্ধান চালাচ্ছে তদন্তকারীরা।